দীর্ঘ ২৬ বছর মামলার কার্যক্রম চালিয়ে সাজা দেয়া হয়েছে ১ বছর। ভেজাল প্যারাসিটামল তৈরীর অভিযোগে পলিক্যাম ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের পরিচালক আবদুর রবকে এই সাজা দেয়া হয়েছে। যদিও কোম্পানিটি এখন বিলুপ্ত।
বৃহস্পতিবার ঢাকার ঔষধ আদালতের বিচারক সৈয়দ কামাল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন বিচারক্। জরিমানার টাকা দিতে না পারলে তাকে আরও তিন মাস জেলে থাকতে হবে।
এ মামলার বাকি তিন আসামি পলিক্যাম ল্যাবরেটরিজের ব্যবস্থাপক এ এম এম গোলাম কাদের এবং ফার্মাসিস্ট মো. মাহবুবুল আলম ও দেলোয়ার হোসেনকে বিচারক খালাস দিয়েছেন।
দণ্ডিত আসামি আবদুর রব এ মামলায় জামিনে ছিলেন। রায়ের পর আপিল করার শর্তে তাকে আবারও জামিন দেওয়া হয়েছে।
খালাস পাওয়া আসামিদের মধ্যে মাহবুব ও দেলোয়ারও রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আর কাদেরকে পলাতক দেখিয়ে এ মামলার বিচার চলে।
এ মামলার আরেক আসামি পলিক্যামের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুনুর রশিদের মৃত্যু হওয়ায় তার নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, প্যারাসিটামল সিরাপে বিষাক্ত উপাদান থাকায় ১৯৮৯ থেকে ১৯৯২ সালের মধ্যে বহু শিশু কিডনি সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। তাদের মধ্যে অন্তত ৭৬ জনের মৃত্যু হয়।
বিষয়টি উদঘাটিত হওয়ার পর পলিক্যাম ল্যাবরেটরিজসহ পাঁচ কোম্পানির তৈরি প্যারাসিটামল সিরাপে ক্ষতিকর ডাই-ইথিলিন গ্লাইকলের উপস্থিতি ধরা পড়ে।
এরপর ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ১৯৯৩ সালের জানুয়ারিতে পলিক্যামের পরিচালক আবদুর রবসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
কিন্তু অভিযোগ গঠনের শুনানি পর্যায়ে আসামিরা হাই কোর্টে গেলে মামলার কার্যক্রমে স্থগিত হয়ে যায়।
দীর্ঘদিন পর সেই স্থগিতাদেশ উঠলে ২০১৫ সালের অক্টোবরে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলার আসামিদের বিচার শুরু করে আদালত। রাষ্ট্রপক্ষে তিনজন এবং আসামিপক্ষে একজন এ মামলায় সাক্ষ্য দেন। দুইপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে গত ২৪ জানুয়ারি মামলাটি রায়ের পর্যায়ে আসে।
আসামিক্ষে এ মামলার শুনানি করেন আইনজীবী আনোয়ার জাহিদ ভূইয়া। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি মো. নাদিম মিয়া।
রায়ের পর নাদিম মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, তারা হাই কোর্টে আপিল করবেন।