আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দলমত নির্বিশেষে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি সরকারকে সহযোগিতা করার আহবান জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে করোনায় মৃত্যুর হার প্রতিবেশী দেশ ভারতের চেয়ে বেশি। এমন বাস্তবতায় মানুষের জীবনের সুরক্ষাকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার।
বুধবার (২৮ জুলাই) নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তার বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি বলেন তিনি।
জীবন রক্ষা না পেলে জীবিকা দিয়ে কী হবে ‑ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, অনেকে লকডাউন শিথিলের কথা বললেও এমন সংকটকালে জীবনের সুরক্ষাকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, কারও কারও অবহেলায় পরিস্থিতি ক্রমে অবনতির দিকে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলমান থাকলে অনাকাঙ্ক্ষিত বিপর্যয়ের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
তিনি বলেন, দেশের মানুষের সুরক্ষায় বিশেষজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার প্রতি আস্থা রাখার জন্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সকলের প্রতি আহবান জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ব্যাপকহারে সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলার পাশাপাশি ভ্যাকসিন প্রদানকেই সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশে ভ্যাকসিনের কোন সংকট নেই। মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে চূড়ান্ত করা হয়েছে ভ্যাকসিন রোডম্যাপ।
দুর্যোগ ও সংকটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি জনমানুষের আস্থা রয়েছে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী জনমানুষের আস্থা পূরণে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। করোনার এ সংকটে তিনি বিনিদ্র রজনীও যাপন করছেন।
জীবন ও জীবিকার সমন্বয় করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী সিদ্ধান্তে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি অন্যান্য দেশের তুলনায় ভালো অবস্থায় রয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন-অর্জন ও সমৃদ্ধিতে যারা লাভবান হয়েছে, বিশেষ করে সমাজের ধনী শ্রেণী‑ মানুষের প্রতি এই সংকটে অন্তত কিছু সহযোগিতা নিয়ে হলেও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বিশাল রাজনৈতিক সংগঠন। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত এ সংগঠনের বিস্তৃতি। অনেকসময় দলে অনুপ্রবেশকারীরা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড চালায়। এসকল কর্মকাণ্ড নজরে এলে সাথে সাথেই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তিনি জানান, অনেক সময় শুধু সাংগঠনিক নয়। আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়ার নজির রয়েছে। যার উদাহরণ সাম্প্রতিককালে সাহেদ, পাপিয়াসহ অনেকের ক্ষেত্রে দল অত্যন্ত কঠোর অবস্থান দেখিয়েছে।
অনেকে অনেক কথাই বলেন, কিন্তু দল ক্ষমতায় থাকাকালে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে দলের নেতাকর্মী এমনকি জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে যে কঠোরতা আওয়ামী লীগ দেখিয়েছে তা অতীতে দেশের কোন রাজনৈতিক দল দেখাতে পেরেছেন কী? ‑ প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের।
শেখ হাসিনা সরকার এবং আওয়ামী লীগ অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করেছে‑ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, দলের অনেক সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা চলমান এবং তদন্তাধীন, আবার কারও সাজাও হয়েছে।
তিনি বলেন, দল কখনো অনিয়মকারীদের প্রশ্রয় দেয়নি। ভবিষ্যতেও দিবে না।
তিনি বলেন, করোনার এ সংকটকালে আওয়ামী লীগের প্রতিটি ইউনিট অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে, কোথাও নেই কোন গতিহীনতা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে সাংগঠনিক সিদ্ধান্তসমূহ অত্যন্ত দক্ষতার সাথে বাস্তবায়িত হচ্ছে। পাশাপাশি দলের উপকমিটি ও সহযোগী সংগঠনগুলো সক্রিয়তার সাথে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।