অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্ত সিল বাংলাদেশের

রাখাইন রাজ্যের বৌদ্ধ ও উপজাতিদের প্রবেশ ঠেকাতে মিয়ানমারের সাথে সীমান্ত সিল করে দিয়েছে বাংলাদেশ। বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদী সশস্ত্র গ্রুপ আরাকান আর্মিকে দমনে মিয়ানমার নিরাপত্তাবাহিনীর চালানো দমন-পীড়নের হাত থেকে বাঁচতে রাখাইনের অধিবাসীদের বাংলাদেশে আসা বন্ধ করতে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত অন্তত ৩৫টি পরিবার রুমা সীমান্ত দিয়ে বান্দরবানে ঢুকে পড়েছে।

এ দিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট স্থিতিশীলতার জন্য একটি হুমকি।

জাতিসঙ্ঘের শরণার্থীবিষয়ক বিশেষ দূত ও জনপ্রিয় হলিউড অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ড. মোমেনের সাথে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আরাকান আর্মি ও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের কারণে রোহিঙ্গাদের পর এবার বৌদ্ধ ও অন্যান্য উপজাতি রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশে আসছে। তবে আমরা সীমান্ত সিল করে দিয়েছি। রাখাইনের আর কোনো অধিবাসী বাংলাদেশে ঢুকতে পারবে না।

নিপীড়তদের আশ্রয় দিতে সীমান্ত খুলে দেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক চাপ আসবে কি না জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, আমরা আগেই সীমান্ত খুলে ১০ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়েছি। এখন অন্যরা তাদের সীমান্ত খুলুক। তিনি বলেন, আমরা আর রোহিঙ্গাদের রাখতে পারব না। মিয়ানমারকে অবশ্যই রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে হবে। তবে প্রত্যাবাসন হতে হবে নিরাপদ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সঙ্কট নিরসনে রাখাইন রাজ্যে সেফ জোন বা নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। বিষয়টি অ্যাঞ্জেলিনা জোলিকে জানিয়েছি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জোলিকে বলেছি রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও দায়িত্ব রয়েছে। রোহিঙ্গা সঙ্কট জিইয়ে থাকলে বিশ্বের স্বার্থ বিঘ্নিত হবে, সবার জন্য অমঙ্গল হবে। সবার স্থিতিশীলতার জন্য রোহিঙ্গা সঙ্কট একটি হুমকি।

গত কয়েক দিনে রাখাইনের কিছু বৌদ্ধ ও উপজাতি সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। অনেককে সীমান্ত থেকে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে আরাকান আর্মি দমনে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের কারণে রাখাইনে নতুন করে অস্থিতিশীল হওয়ায় বড় ধরনের অনুপ্রবেশের আশঙ্কা করছে বাংলাদেশ।

গত মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অনুবিভাগের মহাপরিচালক দেলোয়ার হোসেন মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ লুইনকে তলব করে ঢাকার উদ্বেগের কথা জানান। মহাপরিচালক অনুপ্রবেশের প্রতিবাদ জানিয়ে ভবিষ্যতে পুনরাবৃত্তি না ঘটার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মিয়ানমারকে অনুরোধ করেন। একইসাথে তিনি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান। রাষ্ট্রদূত বিষয়টি তার সরকারকে জানানোর আশ্বাস দেন।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top