ময়মনসিংহে অপহৃত কিশোরী রাজবাড়ীতে উদ্ধার

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থেকে এক কিশোরীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করার ঘটনায় কেন্দ্রীয় পুলিশের দিক নির্দেশনায় ময়মন‌সিংহের পু‌লিশ সুপার মো. আহমার উজ্জামান পিপিএম এর তত্বাবধানে দ্রুত সেই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়েছে।

জানা যায়, বুধবার (২১ জুলাই) সন্ধ্যায় ওই কিশোরীকে অপহরণ করে অপহরণকারীরা। মুক্তিপণ না দিলে তাকে দৌলতদিয়া ঘাটে যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। এঘটনায় বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে বার্তা প্রেরণ করে পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়। তারপরই মুক্তাগাছা থানার ওসি মোহাম্মদ দুলাল আকন্দকে দ্রুততম সময়ে অপহৃত কিশোরীকে উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয় পুলিশ। মুক্তাগাছা থানা পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় ও প্রাথমিক তদন্তে জানতে পারেন মেয়েটির বর্তমান অবস্থান রাজবাড়ি জেলার পাংশা থানার অন্তর্গত একটি এলাকায়। তাৎক্ষণিকভাবে মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং পাংশা থানার ওসি মোহাম্মদ মাসুদুর রহমানকে নির্দেশনা দেয় মুক্তাগাছার ওসির সঙ্গে সমন্বয় করে অপহৃত মেয়েটিকে উদ্ধার করতে।

কিশোরীকে উদ্ধারের জন্য পাংশা থানার এসআই মাসুদুর রহমান এবং এসআই মো. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে দু’টি টিমকে নিয়োজিত করেন। সংশ্লিষ্ট জেলা সমূহের সাইবার ও ডি‌বি টিমসহ পুলিশের একাধিক টিমের নিরলস প্রচেষ্টায় ওই কিশোরীকে গতকাল ২৩ জুলাই সন্ধ্যায় রাজবাড়ি জেলার পাংশা থানার সরিষা ইউনিয়নের পিড়ালীপাড়া গ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার অভিযানসহ অপারেশনাল সার্বিক বিষয়াদি তত্ত্বাবধান করেছেন ময়মন‌সিংহ জেলা পু‌লিশ সুপার মো. আহমার উজ্জামান পিপিএম এবং রাজবাড়ি জেলা পুলিশ সুপার এমএম শাকিলুজ্জামান। পুলিশ চিহ্নিত অপহরণকারী দুর্জয়কে আটক করেছে।

মেয়েটিকে উদ্ধারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, কয়েক মাস আগে অনলাইনে পরিচয়ের সূত্র ধরে দুর্জয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে মেয়েটির। এক পর্যায়ে বাড়িতে কাউকে না জানিয়ে দুর্জয়ের সঙ্গে পালিয়ে যায় সে। দুর্জয় মেয়েটিকে প্রথমে তার নিজের বাড়িতে নিয়ে যায়। তারপর, সেখান থেকে তার নানাবাড়িতে রেখে আসে। মেয়েটির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সে দুর্জয়কে ভালোবাসে এবং তার সাথেই থাকতে চায়।

বাংলা‌দেশ পু‌লিশের এআই‌জি (মি‌ডিয়া অ্যান্ড পাব‌লিক রিলেশনস) সো‌হেল রানা জানান, ‘ঈদের দিন সন্ধ্যায় এক কিশোরীকে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা এলাকা থেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। মুক্তিপণ না দিলে তাকে দৌলতদিয়া ঘাটে যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেয়া হবে বলে হুমকি দেয়া হয়।’

তিনি আরও বলেন, উদ্ধারের পর ‘মেয়েটি বলছে, দুর্জয়কে সে ভালোবাসে এবং তার সঙ্গেই থাকতে চায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দুর্জয়ের দিকের কেউ বা এলাকার কোনো দুষ্টচক্র কোনোভাবে মেয়েটির পরিবারের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে দুর্জয় ও মেয়েটির পরিবারের দুর্বলতার সুযোগে কিছু সুবিধা আদায় করতে চেয়েছিল।’

এইআইজি সোহেল রানা জানান, এ বিষয়ে তদন্ত করে অপরাধীদের খুঁজে বের করে শিগগিরই আইনের আওতায় আনা হবে। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

Share this post

scroll to top