কয়েক দিনের টানা বর্ষণের পর বাঁধ খুলে দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার টাউনসভিল ও আশপাশের এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতে কুইন্সল্যান্ড রাজ্যের রোস নদীর পানির উচ্চতা বাঁধের ধারণক্ষমতাকে ছাপিয়ে যাওয়ায় ফটকগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। ফলে পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। বন্যা উপদ্রুত এলাকায় বাড়িঘর, স্কুল ও বিমানবন্দর পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে এবং হাজার হাজার লোক বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে গেছে। ভয়াবহ এই বন্যায় পথঘাটগুলো নদীতে পরিণত হয়েছে এবং কুমির রাস্তায় চলে এসেছে।
গতকাল সোমবার অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স ফোর্স উপদ্রুত এলাকায় বালুর ব্যাগ সরবরাহ করেছে, উভচর মালবাহী যানবাহন মোতায়েন করেছে ও আটকে পড়া বাসিন্দাদের ছাদ থেকে হেলিকপ্টারে উদ্ধার করেছে। মওসুমি বৃষ্টিপাতে কুইন্সল্যান্ডের উত্তরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় উত্তরাঞ্চলে বর্ষা মওসুমে সাধারণত ভারী বৃষ্টিপাত হয়। তবে এ বছর স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। রোববার কর্তৃপক্ষ পানি নিষ্কাশনের পথ খুলে দিয়েছে। বন্যার পানির স্রোতের গতিকে অত্যন্ত বিপজ্জনক বলছে তারা। বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত টাউনসভিলে গাড়িগুলো পানিতে প্রায় ডুবে গেছে।
ভয়াবহ এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে স্থানীয়দের আকস্মিক বন্যা, ভূমিধস ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতার কারণে অন্ধকারেই দিন কাটানোর পাশাপাশি কুমির ও অন্যান্য হিংস্র সরীসৃপ থেকেও সতর্ক থাকতে হচ্ছে। বন্যা উপদ্রুত টাউনসভিলে বেশ কয়েকটি লোনাপানির কুমির দেখা গেছে। জরুরি সংস্থাগুলো ভয়াবহ এই দুর্যোগের সাথে পাল্লা দিয়ে পেরে উঠছে না। শুধু রোববার রাতেই জরুরি উদ্ধারকর্মীরা ১৮ জনকে পানি থেকে উদ্ধার করেছে। এরা বন্যার পানির স্রোতের তোড়ে ভেসে যাচ্ছিল। রাজ্যপ্রধান আনাস্তাসিয়া প্যালাজজুক বলেন, এক হাজার ১০০ জনের বেশি লোক জরুরি সহায়তা চেয়েছে। টাউনসভিলের প্রায় ৪০০ বাসিন্দা নিকটস্থ লাভারাক সেনা ব্যারাকে আশ্রয় নিয়েছে। বছরে এই অঞ্চলে গড়ে ৮০ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত হয়। তবে কোনো কোনো শহরে ইতোমধ্যেই এর চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এবারের এই বৃষ্টিপাত অবশ্য কুইন্সল্যান্ডের পশ্চিমাঞ্চলে খরাকবলিত কৃষকদের স্বস্তি এনে দিয়েছে। অঞ্চলটিতে মারাত্মক খরা চলছিল।
সূত্র : এএফপি ও বিবিসি