ভরা বর্ষার মৌসুম। দেশের নদ-নদীতে পানি বাড়ছে। জামালপুরের নৌকার কারিগরদের ব্যস্ততাও বেড়েছে। ছোট-বড় নৌকা তৈরির হিড়িক পড়েছে কারিগরদের মধ্যে।
জেলার মেলান্দহ উপজেলার অধিকাংশ অঞ্চল ও রাস্তা-ঘাট বন্যার পানিতে ডুবে যায়। যাতায়াতের জন্য নৌকাই তখন এ অঞ্চলের মানুষের একমাত্র ভরসা। শুষ্ক মৌসুমের ৮ মাস পায়ে হেঁটে এবং বর্ষা মৌসুমের ৪ মাস নৌকায় চলাচল করতে হয় এ অঞ্চলের মানুষদের। যে কারণে আসছে বন্যায় এলাকার পাড়ায় পাড়ায় নৌকা তৈরির ধুম পড়েছে।
উপজেলার ঘোষেরপাড়া, ঝাউগড়া, মাহমুদপুর, আদ্রা ও নাংলা অঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে কারিগরদের কেউ নৌকার ফ্রেম তৈরি করছেন, কেউ ফ্রেম জোড়া দিচ্ছেন, আবার কেউ কাজের শেষ পর্যায়ে রং, আলকাতরা নিয়ে ব্যস্ত।
ঘোষেরপাড়া গ্রামের নৌকার কারিগর সামিউল মিস্ত্রি বলেন, বছরজুড়ে বিভিন্ন এলাকায় কাঠ ও টিনের বাড়ি-ঘর তৈরির কাজ করলেও বন্যার এক-দুইমাস আগে থেকে নৌকা তৈরির কাজ করি। এ বছর করোনার কারণে কঠোর লকডাউন থাকায় চাহিদামত কাঠ সংগ্রহ করতে পারি নাই। যে কারণে নৌকার পর্যাপ্ত চাহিদা থাকলেও অর্ডার নিতে পারি নাই।
একই এলাকার মাঝি গোলাম মোস্তফা বলেন, প্রতিবছর বন্যায় এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে যাতায়াতের জন্য নৌকা ভাড়া দেই। এতে প্রতি মৌসুমে প্রায় ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত রোজগার হয়।
ইউপি চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান বলেন, রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন সত্ত্বেও তুলনামূলক নিম্ন অঞ্চল হওয়ার কারণে বন্যার পানি এলাকায় প্রবেশ করে। তখন নৌকাই একমাত্র ভরসা। ফলে কারিগরদের ব্যস্ততাও বাড়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নানা জাতের কাঠ দিয়ে ১২ থেকে ১৪ হাত নৌকা তৈরিতে খরচ হয় ১২ হাজার টাকা। এসব নৌকা ব্যবহার হয় মাছ শিকার ও সীমিত সংখ্যক মানুষ পারাপারের জন্য।