ময়মনসিংহে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র খুনের রহস্য উন্মোচন

একবছর আগে ময়মনসিংহ শহরের তিনকোনা পুকুরপাড় এলাকায় নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তৌহিদুল ইসলাম খান (২৫) খুন হওয়ার ঘটনায় মূল রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যায় আউটার স্টেডিয়াম এলাকা থেকে ২ আসামিকে গ্রেফতারও করেছে পিবিআই। গ্রেফতারকৃতরা হলেন মো: রিফাত (২৩) এবং মহসিন মিয়া (২৫)। তারা দুজনেই মহানগরীর জামতলা এলাকার বাসিন্দা।

পিবিআই ময়মনসিংহ কার্যালয় এর পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস জানান, ত্রিশালের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলাম (২৫) তিনকোণা পুকুর পাড় এলাকায় মেসে ভাড়া থাকতো। গতবছরের ১ মে মধ্যরাতে অজ্ঞাত আসামীরা তার রুমে প্রবেশ করে বুকে এবং বাম হাতের বাহুতে রড দিয়ে ঘাই মেরে জখম করে। পরে তৌহিদ’কে আহতাবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেদিন ভোর সকালেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছিল। অবশেষে পিবিআই’র  ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদারের নির্দেশনায় ও  গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আসামীদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে বলে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসাইন (পুলিশ পরিদর্শক) জানান, আসামী রিফাত রং মিস্ত্রির কাজ করে। আসামী রিফাত, আশিক, মহসিন ও অন্তর একসাথে চলাফেরা করত। গত ০১/০৫/২০২০ খ্রিঃ রাত ২/৩ টায় তারা মহসিনের বাসায় ইয়াবা সেবন করে। আশিক তাদের ইয়াবা খাওয়া শেখায়। ইয়াবা খাওয়া শেষ হলে আশিক বলে চল একটা মোবাইল চুরি করে নিয়ে আসি। তখন মহসিনের বাসা হতে অন্তর তার বাসায় চলে যায়। আসামী রিফাত, আশিক ও মহসিন তিনকোনা পুকুর পাড় এলাকার সোলায়মানের বাসায় যায়। ঐ বাসার নিচ তলার মেসের রুমে বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষার্থী তৌহিদ থাকত এবং আশিক তাকে পূর্ব থেকে চিনত। আসামী ০৩ জন ছাদ দিয়ে টপকে মেসে তৌহিদের রুমে যায়। তখন তৌহিদ সেহরী খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল এবং তৌহিদের স্মার্ট ফোনটি জানালার পাশে টেবিলের উপর রাখা ছিল। প্রথমে মহসিন জানালা দিয়ে মোবাইলটি নিতে গেলে তৌহিদ দেখে ফেলে। পরে তৌহিদ দরজা খুলে বাহিরে আসলে আসামী আশিক তাকে জাপটে ধরে। আসামী রিফাত হাত ধরে। আসামী মহসিন দেড়হাত লম্বা লোহার রড দিয়ে তৌহিদের বুকে ঘাই মারে। তখন আসামী আশিকও তৌহিদকে মেরে রক্তাক্ত জখম করে। এরপর তৌহিদ ডাক চিৎকার শুরু করলে আসামীরা পালিয়ে মহসিনের বাসায় যেয়ে ঘুমিয়ে পরে।

Share this post

scroll to top