সরকার সন্ত্রাস মোকাবেলায় জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে। কিন্তু সুরক্ষিত যানবাহনের অভাবে অনেক সময় সন্ত্রাসী কার্যক্রম দমনে অভিযান পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে না। সীমিত জনবল, লজিস্টিকস ও যন্ত্রপাতি দিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ বিগত কয়েক বছরে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রায় প্রতিটি অপারেশনে সফলতা অর্জন করছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কিছু আন্তর্জাতিক উগ্রবাদী গোষ্ঠীর কারণে বাংলাদেশের এ অর্জন হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। এটি মোকাবেলায় বাংলাদেশ পুলিশের জন্য এপিসি, স্কট গাড়ি ও ফ্লাড লাইট গাড়ি কেনা হচ্ছে। বাংলাদেশ ও জাপান সরকারের অর্থায়নে এসব যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
পুলিশ বিভাগের দেয়া প্রস্তাব থেকে জানা গেছে, সন্ত্রাসবাদ ও জননিরাপত্তায় বাংলাদেশ সক্ষমতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। দেড় বছরে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ৭৯ কোটি ৮৭ লাখ ৮৭ হাজার টাকার একটি প্রস্তাবনা দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। মূল কাজ হলো, ৩৫টি বিভিন্ন ধরনের অভিযান সরঞ্জামাদি কেনা। এগুলোর মধ্যে ১০টি আরমোরেড পারসোনাল ক্যারিয়ার (এপিসি), ২০টি এস্কট ভেইকেল এবং ৫টি ফ্লাড লাইট ভেইকেল ক্রয় করা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের দ্রুত অপারেশন এবং দুর্ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছানোর জন্য যে পরিমাণ যানবাহন প্রয়োজন তা পর্যাপ্ত নয়। ফলে যানবাহন সঙ্কটের জন্য দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারছে না। এ ছাড়া উগ্রবাদ ও অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যই ৫৮১ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন প্রকাশ যানবাহন ও যন্ত্রপাতি ক্রয় প্রকল্প রয়েছে। সেখানে বিভিন্ন ধরনের ৯৯৪টি যানবাহন কেনা হবে।
নতুন প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, বর্তমানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে (ডিএমপি) প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে হয়। প্রয়োজনীয় যানবাহন ও লজিস্টিকসের অভাবে অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে ডিএমপিকে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। এপিসির মতো সুরক্ষিত যানবাহনের অভাবে অনেক সময় সন্ত্রাসী কার্যক্রম দমনে অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয় না। নিকটাতীতে দেখা গেছে, সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য রাতে সঙ্ঘবদ্ধ হয়। কিন্তু ডিএমপির ফ্লাড লাইট ভেইকেলের মতো বিশেষ ধরনের যানবাহন না থাকায় গোয়েন্দা তথ্য থাকা সত্ত্বেও রাতে অভিযান পরিচালনা না করে দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। এর ফলে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো তাদের কার্যক্রম পরিকল্পনায় পর্যাপ্ত সময় পায়। সার্বিকভাবে প্রয়োজনের চেয়ে পুলিশের যানবাহনের সংখ্যা কম।
প্রকল্প পর্যালোচনা থেকে জানা গেছে, বাংলাদেশের ব্যবহার উপযোগী করে এবং এর মধ্যে জেআইসিএস কর্তৃক সরবরাহকৃত মূল্য তালিকা ও পুলিশ সদর দফতরের যানবাহন শাখার তথ্যের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়েছে। গাড়িগুলো চালানোর জন্য বাংলাদেশ পুলিশের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষিত জনবল আছে।