রিও ডি জেনেরিও। ব্রাজিল দলের লকার রুম।
মাত্রই অনুশীলন শেষ করেছে ব্রাজিল দল। আগের রাতেই সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, অনুশীলন শেষে মিটিং হবে। বেশ আয়েশ করে এই বৈঠকের একটা নামও ঠিক হয়েছে; ফাইনাল ফিনিসিং!
১১ জুলাই আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে কোপা আমেরিকায় ফাইনালে নামছে ব্রাজিল। প্রতিপক্ষ চিরচেনা আর্জেন্টিনা। ফাইনালের কৌশল স্থির করার সেই বৈঠক। কোচ তিতে তার সহকারিদের নিয়ে আগেই ঠিক করে রেখেছেন কোথায় কিভাবে কোন কৌশল নিয়ে আর্জেন্টিনাকে আটকাতে হবে। নিজের সেই ব্যাখা দেওয়ার আগে দলের বাকিদের কাছ থেকে পরিকল্পনা চাইলেন ব্রাজিল কোচ। কোনার বেঞ্চে দাড়ানো গোলকিপার কোচ ক্লদিও তাফারেল সবার আগে হাত তুললেন।
‘‘বেশি হাই ডিফেন্সে থাকা চলবে না আমাদের। মেসি ও ডি মারিয়ার পেসের সঙ্গে তাহলে পেরে উঠা যাবে না। পুরো টুর্নামেন্টে আর্জেন্টিনার খেলা দেখলে একটা বিষয় পরিস্কার, মেসিকে কেন্দ্র করেই তাদের সব ছক। মেসির কাছে যাতে বল না যায় এবং থার্ড জোনে মেসির বল সাপ্লাইয়ের চেইনটা বন্ধ করতে হবে।’’
হাতে ধরে রাখা খাতায় কি সব আঁকাআঁকি করে কোচ তিতে মুখ তুললেন,‘ ওর বল সাপ্লাই চেইন তো আর বন্ধ করা যাবে না, সংখ্যাটা যাতে কমানো যায় সেই চেষ্টা করতে হবে। আর এই কাজটা বরাদ্ধ ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের জন্য।’
ফাইনালে ক্যাসিমিরো, ফ্যাবিয়ানো ও ডগলাস লুইসের কাজ কি থাকছে, সেটা ঠিক হয়ে গেল এই বৈঠকে।
আলোচনায় নেইমারকে ফ্লোর নিতে সহকারি কোচ ম্যাথিউস বাচ্চি ও ক্লেবার হ্যাবিয়ার ইশারা করলেন।
বড় ম্যাচের আগের মেসির প্রস্তুতিটা কেমন হত, সেটা সবচেয়ে ভাল জানা নেইমারের। বার্সার হয়ে দুজনে অনেক বড় ম্যাচের সঙ্গী। সেসময় মেসির প্রস্তুতি কেমন হতো, কৌশল কি থাকতো সেই আলোচনা পেড়ে নেইমার জানিয়ে দিলেন, আমাদের আসলে ওকেই আটকাতে হবে।
লকার রুমের বোর্ডে মার্কার কলমে এই টুর্নামেন্টে মেসির পারফরমেন্স আঁকা।
গোল ৪। অ্যাসিস্ট ৫। ড্রিবলিং ৩৩। টার্গেটে শট ১১। সুযোগ তৈরি ২০। ফাইনাল থার্ডে পাস ১০২।
মোট হিসেব; টুর্নামেন্টে আর্জেন্টিার ১১ গোলের মধ্যে ৯টিতেই মেসির কৃতিত্ব।
বোর্ডে নিচেই ছোট্ট করে লেখা, তুলনাহীন!
ফাইনালে নামার আগে ব্রাজিল জানে কোপা আমেরিকার ট্রফিতে হাত রাখতে হলে ১১ জুলাইয়ের ফাইনালে তাদের কাছে একটাই সমাধান মেসিকে আটকাও!
সমস্যা হলো, প্রতিপক্ষ যখন আর্জেন্টিনা তখন সবাই সেই একই চেষ্টা করে। কিন্তু সফল হয় ক’জনা?
ছোট্ট একটা উদাহরণ।
সেমিফাইনালে কলম্বিয়ার ৬ জন খেলোয়াড় হলুদ কার্ড দেখেন। এই ছয়জনই মেসিকে ফাউল করার জন্যই হলুদ কার্ড পেয়েছেন। কিন্তু তারপরও কি মেসিকে আটকে রাখা গেছে?
কলম্বিয়ার সঙ্গে ব্রাজিলের জার্সির রংয়ে দারুণ মিল; হলুদ!