মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী বাহিনীর হামলায় দেশটির সামরিক বাহিনীর ৪০ এর বেশি সৈন্য নিহত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সাগায়িং অঞ্চলে সামরিক বাহিনীর সাথে ২ জুলাই ও ৪ জুলাই দু’টি পৃথক সংঘর্ষে এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে দাবি করেছে জান্তাবিরোধী সশস্ত্র সংগঠন পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ)।
গত ২ জুলাই সাগায়িং অঞ্চলের কাওলিন শহরের কাছে সেইন্ট গন গ্রামে এবং ৪ জুলাই নইয়াঙ গন ও কককো গন গ্রামের মাঝামাঝি রাস্তায় সামরিক বাহিনী ও জান্তাবিরোধী সশস্ত্র সংগঠনের মধ্যে এই দুই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সংঘর্ষে তিনটি সামরিক ট্র্যাকও ধ্বংস করা হয়।
এতে আরো বলা হয়, স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনকামী কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মি (কেআইএ) তাদের সহায়তা করেছে।
এদিকে মিয়ানমারের অবস্থা পর্যব্ক্ষেণকারী থাইল্যান্ডভিত্তিক সংস্থা অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) তাদের দৈনিক প্রতিবেদনে জানায়, ১ ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশটিতে বিক্ষোভে সামরিক জান্তার দমন অভিযানে অন্তত আট শ’ ৯৮ জন নিহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বিক্ষোভ সংশ্লিষ্টতায় সামরিক জান্তার হাতে গ্রেফতার হয়েছেন ছয় হাজার পাঁচ শ’ ৬৩ জন। বর্তমানে বন্দী রয়েছেন পাঁচ হাজার এক শ’ ২৭ জন। এছাড়া গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে আরো এক হাজার নয় শ’ ৬৩ জনের নামে।
১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী তাতমাদাও দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থান ঘটায় এবং প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করে। সাথে সাথে দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিতর্কের জেরে এই অভ্যুত্থান ঘটায় সামরিক বাহিনী।
সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরেই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা অং সান সু চিসহ বন্দী রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির পাশাপাশি সামরিক শাসন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন। শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হওয়া অহিংস বিক্ষোভকে সামরিক উপায়ে জান্তা সরকার দমন করতে গেলে বিক্ষোভকারীরাও বিভিন্ন স্থানে অস্ত্র হাতে নেয়।
সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি ও ইরাবতি