ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ল্যাবে ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট টেস্ট হচ্ছে না। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইডিসিআর এর গাফিলতির কারণে আটকে আছে করোনার ডেল্টা টেস্ট। করোনার ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবে গত একমাসে প্রায় ২৫টি স্যাম্পল সংগ্রহণ করা হয়েছে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ল্যাবে ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট টেস্ট করার কোন প্রক্রিয়া না থাকায় ল্যাব থেকে জমাকৃত নমুনাগুলো এখনও আইডিসিআর সংগ্রহ করেনি। ফলে ময়মনসিংহে ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিন্টের সংক্রমণ আছে কিনা তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি ল্যাব সূত্রে জানা যায়, সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইডিসিআর গত একমাস আগে নমুনা সংগ্রহ করতে বলে। সেজন্য কিছু নির্দেশনাও দেয় আইডিসিআর। আইডিসিআর এর নির্দেশনা অনুযায়ী যেসব নমুনাতে করোনা ভাইরাসের লোড বেশি অর্থাৎ সিটি ভ্যালু ২৭ এর নিচে এমন ২৫টি নমুনা সংগ্রহ করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাব। কিন্তু এসব নমুনার এখনও জিনোম সিকোয়েন্সিং করেনি আইডিসিআর।
ময়মনসিংহ লাইভ এর অনুসন্ধানে জানা যায়, একটি বেসরকারি কুরিয়ার সার্ভিস সংস্থার সাথে সমঝোতা চুক্তি শেষ না হওয়ায় ময়মনসিংহ থেকে আইডিসিআরে পাঠানো যাচ্ছে না জমাকৃত নমুনা। একারণেই মূলত ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ভাইরাস শনাক্ত প্রক্রিয়া থমকে গেছে। অথচ একমাস আগে থেকেই নির্দেশনা অনুযায়ী সপ্তাহে দুইদিন ঢাকায় স্যাম্পল নেয়ার কথা জানিয়েছিল আইডিসিআর। এদিকে গত ৩ জুলাই নমুনা সংগ্রহ করতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পুনরায় চিঠি দেয় আইডিসিআর। কিন্তু করোনার নমুনা ঢাকায় আনা নেয়ার জন্যই মূলত আটকে আছে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের প্রক্রিয়াটি।
এব্যাপারে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও ল্যাব ইন-চার্জ ডা. সালমা আহমেদ ময়মনসিংহ লাইভকে বলেন, আইডিসিআর এর সাথে আমাদের মিটিং হয়েছে। তারা একমাস আগে থেকেই আমাদের নমুনা সংগ্রহ করতে বলেছে। সপ্তাহে দুদিন স্যাম্পল নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু কুরিয়ার সার্ভিসের সাথে এখনও সমঝোতা না হওয়ায় ল্যাবে জমাকৃত নুমনাগুলো ঢাকায় পাঠানো যাচ্ছে না। যেকারণে আমাদের ল্যাবে ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কোন নমুনা পাওয়া গেছে কিনা বা ইতোমধ্যে কোন রোগী নমুনা টেস্ট করেছে কিনা তা এখনও আমরা নিশ্চিত না।
এদিকে এপ্রিল মাসে করোনা সংক্রমিতদের মধ্যে বেটা ভ্যারিয়েন্টের প্রাধান্য ছিল বলে জানিয়েছিল আইডিসিআর। এপ্রিলে বাংলাদেশে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের হার বাড়তে থাকে। বতর্মানে এই ভ্যারিয়েন্টের প্রাধান্য সুস্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। ময়মনসিংহও এই ভ্যারিয়েন্টের বাইরে নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। সেজন্য দরকার ভারতীয় নমুনা শনাক্তের দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করা।