সাকিব নাকি মুশফিক, কে হাসবে শেষ হাসি?

বিপিএলের শেষ দৃশ্যের অবতারণা। তুমুল উত্তেজনাপূর্ণ দৃশ্য জুড়ে শিরোপা লড়াই। এর প্রথম এক ধাপ এলিমিনেটর। যাতে অংশ নেবে চট্টগ্রাম ভাইকিংস ও ঢাকা ডায়নামাইটস। মিরপুর শেরেবাংলায় দুপুর দেড়টায় অনুষ্ঠিত দিনের প্রথম ম্যাচে কে জিতবে তা নিয়ে টেনশনের আর অন্ত নেই। তার যথেস্ট কারণও আছে। নামের দিক থেকে যে কেউই প্রথম বলবে ডায়নামাইটসের কথা। কিন্তু এ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে ভাইকিংসের কথা। এর পেছনে যে যুক্তি সেটা এ আসলে দুই দলের পারফরম্যান্স। কোন দিক থেকে ডায়নামাইটসের নাম প্রথম উচ্চারণ যুক্তিসঙ্গত।

লিগ পর্বে খেলে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে আজ প্লে-অফ পর্বে খেলছে ভাইকিংস। ঢাকা খেলছে ১২ পয়েন্ট নিয়ে। ফলে এখানে ভাইকিংসই এগিয়ে। লিগ পর্বে দুই দলের মধ্যে দু’বার লড়াই হয়েছে। তাতে দু’বারই জিতেছে চিটাগং ভাইকিংস। মুশফিকের রহীমের দলটি অন্তত ঢাকার সাথে লড়াইয়ে ফ্রন্টফুটে। ফলে চিটাগং ভাইকিংসকে ফিল্ড লড়াইয়ে এগিয়ে রাখতেই হচ্ছে।

হ্যাঁ, তারকা ক্রিকেটারদের দিক থেকে অবশ্যই এগিয়ে ডায়নামাইটস। বিগ বাজেটে গড়া দলটি হয়তো সেভাবে খেলতে পারেনি। কিন্তু ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচে দুর্দান্ত খেলে এক রকম খুলনাকে উড়িয়ে দিয়ে প্লে-অফে ঠাঁই করে নেয় নিজেদের। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান জানেন, চূড়ান্ত পর্বের খেলার ধরনই অন্যরকম। ওখানকার মেজাজও আলাদা। কারণ এ ম্যাচে হেরে যাওয়ার অর্থ টুর্নামেন্টকে গুডবাই জানাতে হবে। সাকিবরা যেমনটা সেটাই চাইবে না। তেমনি মুশফিকের দলও সেটাতে যাবে না। তাহলে একদলের তো আজ হারতে হবে। দু’দলই তো আর জিতবে না। কোন সে দল? কে হাসবে। কে টিকে থাকবে ফাইনালে যাওয়ার আরেকটি সুযোগের অপেক্ষায়?

ঢাকা এ ম্যাচে তেতে রয়েছে! দু’বার তারা চিটাগংয়ের কাছে হেরে কিছুটা হলেও সম্মানহানি দলটির। কারণ বাজেট, তারকা খ্যাতিতে তো তারাই এগিয়ে। তবু দুই লড়াইয়েই হেরে যেতে হবে? দু’দলের মধ্যে প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল ২১ জানুয়ারি শেরেবাংলায়। তুমুল উত্তেজনাপূর্ণ সে ম্যাচে ঢাকা ব্যাটিংই করতে পারেনি সেভাবে। ১৩৯/৯ করলে চিটাগাং এক বল হাতে রেখে সাত উইকেট খরচায় জিতে যায় ম্যাচ। ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রামে হয় এদের মধ্যে দ্বিতীয় সাক্ষাৎ। দু’দলই পূর্বের ম্যাচে হেরে কোণঠাসা অবস্থায় পড়েছিল। ওই ম্যাচটি যেমন জয়ের প্রয়োজন ছিল মুশফিক-মোসাদ্দেকদের। তেমনি সাকিব-আন্দ্রে রাসেলদেরও। শেষ পর্যন্ত প্রথম ব্যাটিং করে চট্টগ্রামের করা ১৭৪ রানের জবাবে ঢাকা টেনশনে থেকে ব্যাটিং করে ১৬৩/৯ তে শেষ করে ইনিংস। ১১ রানে জিতে যায় মুশফিক। এ ম্যাচে তাইতো আত্মবিশ্বাসটা ক্ষানিকটা বেশিই থাকছে মুশফিকদের। কিন্তু ডায়নামাইটস কি হেরে যাওয়ার দল? শিরোপা লড়াই না করেই ছিটকে যাবে তারা?

মোটেও না। সাকিবে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তারা। পূর্ব পরাজয়ের প্রতিশোধটা তারা নেবে, টুর্নামেন্টে টিকে থাকার এ লড়াইয়ে। এ ম্যাচ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কোচ খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘এটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। জিততে পারলে টুর্নামেন্টে থাকব,হারলে শেষ।’

তিনি বলেন, ‘দলে উপল থারাঙ্গা যোগ দেয়ায় একটা কম্বিনেশন তৈরি হয়েছে। আশা করি এখন ভালো হবে। তা ছাড়া বিদেশীরা এখনো সেভাবে যারা নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি তারা এখন ভালো করবেন।’ চিটাগাং প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘তাদের সাথে আমরা হেরেছিলাম। তবে সেটা কাছাকাছি গিয়ে।’

দলের কৃতী খেলোয়াড় আন্দ্রে রাসেল প্রসঙ্গে তার মন্তব্য, ‘সে এমন একজন ক্রিকেটার যে, একটি ম্যাচ জিতিয়ে দেয়ার জন্য তার একার পারফরম্যান্সই যথেষ্ট।’

সাকিব প্রসঙ্গেও কিছুটা অভিমান (!) তার। ‘তার কাছ থেকে সেভাবে রান পাইনি। অথচ বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডারদের একজন তিনিও। আশা করি তিনি ফ্রন্টফুটে থেকেই নেতৃত্ব দেবেন এ ম্যাচে। মুশফিকও চমৎকার পারফরম্যান্স করে এগুচ্ছেন দল নিয়ে। লড়াইটা এ দুইয়ের মধ্যেও।

মুশফিকের দলে রয়েছেন ডেলপোর্ট, ফ্রাইলিংক, নাজিবুল্লাহ জারদান, সিকান্দার রাজা, সানাকা, মোসাদ্দেক, আবু জায়েদ, নাঈম হাসান, সাদমান প্রমুখ খেলোয়াড়। যাদের নিয়েই দলটি লড়াই করে এসেছে এ পর্যন্ত। আজও তাদের চোখেমুখে যে আত্মবিশ্বাস সেটা ফাইনালে ওঠার টার্গেটেই এটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top