আরাকান আর্মির সাথে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ

মিয়ানমারের চিন রাজ্যের প্রায় দুইশ’ শরনার্থী বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের জন্য এখন পার্বত্য জেলা বান্দরবানের রুমা উপজেলা সীমান্তে জড়ো হয়েছেন। উপজেলার দুর্গম রেমাক্রী পাংসা ইউনিয়নের ৭২ নং পিলারের কাছে চাইক্ষিয়াং পাড়ার ওপারে এসব শরনার্থী এখন অবস্থান করছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

মিয়ানমারের চিন রাজ্যের প্লাতোয়া জেলায় বেশ কিছু দিন ধরে সেখানকার বিচ্ছিন্নতাবাদী আরাকান আর্মির সাথে সেনাবাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ চলার পর আতঙ্কে এসব শরনার্থী বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে বলে স্থানিয়রা জানিয়েছেন। তবে শরনার্থীরা যাতে বাংলাদেশের ভুখন্ডে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য রুমা ব্যাটালিয়নের সেনাবাহিনী ও বিজিবির ৪টিরও বেশি টহল দল এখন সীমান্তে অবস্থান করছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিজিবির বান্দরবান সেক্টরের সেক্টর অধিনায়ক কর্নেল জহিরুল ইসলাম জানান, শরণার্থীরা যাতে কোনভাবেই বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য সীমান্তে সতকর্তা জারী করা হয়েছে। সীমান্তের সম্ভাব্য স্থানগুলোতে টহল দল পাঠানো হয়েছে।

রেমাক্রী পাংসার ইউপি চেয়ারম্যান জিরা বম ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সীমান্তের ওপারে চিন রাজ্যের প্লাতোয়া জেলার কান্তালিন, খামংওয়া, তরোয়াইন এলাকাগুলোর পাড়ায় ব্যাপক গুলি ও হেলিকাপ্টার থেকে বোমা বর্ষণ করছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এসব জায়গা থেকে মিয়ানমারের খুমি, খেয়াং, বম ও রাখাইন সম্প্রদায়ের প্রায় ২০০ নারী পুরুষ ও শিশু আতংকে বাংলাদেশের সীমান্তে অনুপ্রবেশের জন্য চলে এসেছে। তারা এখন রুমা উপজেলার রোমাক্রী পাংসা ইউনিয়নের চাইক্ষাং সীমান্তের ওপারে তিদং এলাকায় জড় হয়েছে। এসব শরনার্থীরা এখন বান্দরবান সীমান্তের চাইক্ষিয়াং পাড়া, নেপু পাড়াসহ কয়েকটি পাড়ায় অবস্থানের জন্য চেষ্টা করছে। এরা সবাই মিয়ানমারের নৃগোষ্ঠীর লোক।

প্রসঙ্গত গত ডিসেম্বর থেকে মিয়ানমারের রাখাইন ও চীন রাজ্যে সেখানকার শক্তিশালী বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ আরাকান আর্মির নেতৃত্বে বিজিপি ও সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। এরপর থেকে সেখানে সেনাবাহিনীর সাথে আরাকান আর্মির ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে। রাখাইনের বুথিডং রাথিডং এলাকার স্থানিয়রা নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে পারলেও চিন রাজ্যের প্লাতোয়া জেলার লোকজন সীমান্ত কাছে হওয়ায় বাংলাদেশের বান্দরবান সীমান্তে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে।

২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে রোহিঙ্গাদের ব্যাপক সংঘর্ষের পর সেখান থেকে ৭ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয়।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top