ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে দুর্নীতির মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে তার বাসভবনে যাওয়ার পর সেখানে নাটকীয় ঘটনা ঘটেছে।
প্রথমে সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ সিবিআই কর্মকর্তাদের বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেয়। পরে দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটে।
এক পর্যায়ে পুলিশ সিবিআই কর্মকর্তাদের টেনেহিচড়ে গাড়িতে তুলে স্থানীয় থানায় নিয়ে যায় এবং তাদেরকে সেখানে আটক করে রাখে।
পরে ঘটনা আরো নাটকীয় রূপ নেয় যখন সিবিআই-এর এই চেষ্টার প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি নিজে সরাসরি পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে গিয়ে হাজির হন।
সেখানে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার বিজেপি তার বাহিনী দিয়ে তার (মমতা ব্যানার্জির) পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে। তিনি এর প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
রোববার সন্ধ্যায় এসব ঘটনা ঘটেছে।
বলা হচ্ছে, চাঞ্চল্যকর সারদা ও রোজভ্যালি দুর্নীতি মামলায় জেরা করতে আগে থেকে কোনো ধরনের অনুমতি না নিয়ে সিবিআই-এর গোয়েন্দারা মি. কুমারের বাসভবনে যান।
এর আগে সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয় যে ওই দুটো দুর্নীতির মামলায় সিবিআই কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের ওপর নজর রাখছিল। তদন্তের অংশ হিসেবে তারাও তাকে জেরা করতে চান।
সিবিআই বলছে, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে তাকে বারবার নোটিস দেয়া হলেও তিনি তাতে সাড়া দেননি।
সারদা কেলেঙ্কারিতে তদন্তের জন্যে কুমারকে প্রধান করে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় যে এই কেলেঙ্কারির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে তিনি যেসব তথ্যপ্রমাণ জব্দ করেছিলেন সেগুলো তিনি সিবিআই-এর কাছে হস্তান্তর করেননি। এই ঘটনা তদন্তের কাজ পরে সিবিআইর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং বর্তমানে এই সংস্থাটিই তদন্ত করছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিসহ আরো কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিকে বাঁচানোর জন্যেই তিনি এসব তথ্য কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে দেননি বলে অভিযোগে বলা হচ্ছে।
কিন্তু মমতা ব্যানার্জি বলছেন, “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই পুলিশ কমিশনারের ওপর এই আক্রমণ চালানো হয়েছে।”
তবে এসব বিষয়ে সিবিআই-এর কাছ থেকে এখনো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সন্ধ্যার নাটকীয় এসব ঘটনার পরপরই মমতা ব্যানার্জি অনির্দিষ্টকালের জন্যে অবস্থান কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেন। তারপর তৃণমূল কংগ্রেসের শত শত সমর্থক সেখানে জড়ো হয়ে সিবিআই-বিরোধী স্লোগান দিতে শুরু করে।