নেশাজাতীয় তরল জুস খাইয়ে অটো ছিনতাই চক্রের দুই নারী সদস্য সহ চারজনককে গ্রেফতার করেছে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এসময় তাদের দেওয়া তথ্যমতে ছিনতাই করা দু’টি অটো এবং দু’টি মোবাইল ফোন্ উদ্ধার করা হয়।গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ভুরঙ্গামারির মোঃ খোরশেদ আলম (৩৬) গাজিপুরেরে বকুল মিয়া (২৫) নান্দাইলের মোছাঃ শেফালী বেগম (৩০) কলমান্দার মোছাঃ ইয়াসমিন আক্তার (২৬)। গাজিপুরের মনিপুর বাজার থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
চলতি বছর ১২এপ্রিল এবং ১জুলাই গ্রেফতারকৃতরা আলাদা দু’জন চালককে নেশাজাতীয় তরল জুন পান করিয়ে দুটি ছিনতাই করে। তাদের মধ্যে নেমাজাতীয় জুস পান করে শাহিনুর ইসলাম নামে এক চালক মারা যান এবং চিকিৎসা নিয়ে বেচে যান আরেক চালক মোঃ সাইদুল ইসলাম । সাইফুর ইসলামের মামলার সুত্র ধরেই ওই চারজনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
চলতি বছরের বার এপ্রিল গৌরীপুর কলতাপাড়া অটোচালক শাহিনুর ইসলাম (৫২) প্রতিদিনের ন্যায় সকালে অটো নিয়া বের হন। তার বাড়ি গৌরীপুরের নন্দিপাড়া গ্রামে। স্বাভাবিক ভাবেই রাতে তার বাসায় ফেরার কথা। কিন্তু সে আর ফিরেনি। পরের দিন ১৩ এপ্রিল শাহিনুরের স্ত্রী গৌরীপুর থানায় তার স্বামী নিখোঁজ হযেছে মর্মে গৌরীপুর থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন। ১৬ এপ্রিল একজনের ফেসবুকে পোষ্ট থেকে জানতে পারেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ মর্গে একজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির মৃতদেহ পরে আছে। তা দেখে শাহিনুরের স্ত্রী মোছাঃ পারভীন আক্তার ও তার ভাইয়েরা মিলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ মর্গে গিয়ে শাহিনুরের লাশ সনাক্ত করেন। পরে নিহতের স্ত্রী মোছাঃ পারভীন আক্তার (৩৮) ১৯ এপ্রিল গৌরীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু করেন। মামলাটি তদন্তে নামে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। দীর্ঘ তদন্তকালে হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজের ছবি দেখে অপরাধী চক্রটি সনাক্ত করতে সক্ষম হয় পুলিশ। পরে ১ জুলাই দিবাগত রাতে ঘটনার সাথে জড়িত দুই নারীসহ চারজনকে গাজীপুর হোতাপাড়া থানার মনিপুর বাজার এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তারা নিজের অপরাধ স্বিকার পুলিশের কাছে বলেন, প্রথমে বয়স্ক চালক দেখে নির্দিষ্ট গন্তব্যর জন্য অটো রিজার্ভ করেন তারা। যাত্রার পর সবাই জুস জাতীয় তরল খাবার পান করেন।কিন্তু চালককে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশ্রিত তরল জুস খাওয়ানো হয়। এই পদ্ধতিতে ২৬ জুন নান্দাইল থানা এলাকা থেকেও একটি অটো রিজার্ভ করেন গ্রেফতারকৃতরা। পথিমধ্যে চালককে চেতনানাশক খাবার খাইয়ে অটো নিয়ে চলে যায়। অটো চালক হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করে সুস্থ হন। পরে এই ঘটনায় ভিকটিম মোঃ সাইদুল ইসলাম নান্দাইল থানায় ১ জুলাই একটি মামলা রজু করেন।
গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মো শাহ কামাল আকন্দ বলেছেন, এ ধরনের অপরাধ কমিয়ে আনতে অটো চালকরা যাতে যাত্রীদের কাছ থেকে কোন তরল পানীয় গ্রহন না করেন এজন্য চালকদের নিয়ে তারা একটি ক্যাম্পেইন করবেন। যাতে চালকরা সচেতন হতে পারেন।