ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমিন কারাবন্দি অবস্থাতেই জুম অ্যাপে মিটিং করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব মিটিংয়ের ভিডিওতে তাকে নতুন এমএলএম ব্যবসার পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলতে দেখা গেছে।
বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কারা অধিদপ্তর। তবে কারাগারের দায়িত্বশীল একটি সূত্র দাবি করছে, মিটিংয়ের ভিডিওগুলো এখনকার নয়- পুরোনো ভিডিও ছড়িয়ে বিতর্ক সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়েছে কোনো পক্ষ।
এ প্রসঙ্গে কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন বলেন, প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছে, তা তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর বলা যাবে। কারা অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক (ঢাকা) তৌহিদুল ইসলামকে প্রধান করে গঠিত কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডায়াবেটিসজনিত অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দুই মাস ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের প্রিজন সেলে আছেন রফিকুল আমিন। অসুস্থতার অজুহাত কাজে লাগিয়ে তিনি কারা তত্ত্বাবধানে থেকেও ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। জুম মিটিংয়ের সাম্প্রতিক কিছু ভিডিওতে দেখা যায়, নতুন এমএলএম ব্যবসার জন্য শিগগির এক হাজার ৩০০ মার্কেটিং এজেন্ট নিয়োগের কথা বলছেন তিনি। মিটিংয়ের ভিডিওতে তাকে ‘মিস্টার এ’ নামে দেখা গেছে, প্রোফাইল ছবিতে লেখা ছিল ইংরেজি হরফ ‘আর’। এতে ডেসটিনির বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাও যুক্ত ছিলেন। মিটিংয়ে রফিকুল বলেন, কেরানীগঞ্জে (কারাগারে) যাওয়ার কারণে সেই কাজ (নিয়োগ) পিছিয়ে গেছে।
কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা অবস্থায় এপ্রিলে অসুস্থ হয়ে পড়েন রফিকুল। পরে তাকে বিএসএমএমইউর প্রিজন সেলে স্থানান্তর করা হয়। হাসপাতালে তার নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেন দু’জন কারারক্ষী। বিএসএমএমইউ শাহবাগ থানা এলাকায় হওয়ায় পুলিশ সদস্যরাও এ বিষয়ে নজর রাখেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান কারা অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক (ঢাকা) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, রফিকুল আমিনের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ পাওয়া গেছে সেগুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এখনই এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করা যাচ্ছে না।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ বলেন, কোনো কারারক্ষীর দায়িত্বে অবহেলা থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর অভিযোগ সত্য হলে রফিকুল আমিনের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২০১২ সালের ৩১ জুলাই রাজধানীর কলাবাগান থানায় ডেসটিনিরি এমডি রফিকুল আমিন ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ওই বছরের অক্টোবরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে চারবার ১১৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও ৯৬ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে।