সাংবাদিকতার সংকট কি শহর কি মফস্বল! সাংবাদিকতা পেশাটিই নানা সংকটে-ঝুঁকিতে আবর্তিত বাংলাদেশ তো বটেই সারা বিশ্বেই। এ সংকট কখনো কম কখনো প্রকট হয়ে দেখা দেয়। মফস্বলও সে সংকটের বাইরে নয়। সাধারণত অনেকের কাছে রাজধানী ঢাকার বাইরে যেসব এলাকা রয়েছে তার সবই মফস্বল বা গেঁয়ো বা গ্রাম্য। সারা দেশের মফস্বলে কর্মরত সাংবাদিকদের জীবন কেমন কাটছে? তাদের সংসারে খাবার আছে কি না? এ খবর কি কেউ নিচ্ছে? মফস্বল সাংবাদিকদের জীবন আজ গভীর খাদের কিনারে এসে দাঁড়িয়েছে। তারা মান সম্মানের প্রশ্নে মুখ ফুটে কারও কাছে বলতেও পারছেন না আবার চলতেও পারছেন না। মফস্বল সাংবাদিকদের সংসার কিভাবে চলছে এ খবর কেউ নিচ্ছে কিনা ? এর উত্তরে কী বলবো? কে খবর নিবে? মিডিয়া মালিক না সরকার। প্রথমেই বলতে হয় যে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সেই মিডিয়ার দায়িত্বই সবার চেয়ে বেশি। তারপরেও সরকারের ভুমিকাও কম নয়। মিডিয়া কর্তৃপক্ষ সম্পর্কে কি বলবো? মিডিয়া সম্রাটরাই ভালো বলতে পারেন তারা সে দাযিত্বটুকু নুন্যতম পালন করছেন কি না?
আমরা যারা মফস্বলে কাজ করি খবর নেয়ার নৈতিক সাহসটিও হারিয়েছেন অনেকে। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, দূর্যোগের মধ্যেও দায়িত্ব পালন করি। গভীর থেকে সত্য বের করে আনতে কখনো নিজের জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কাকে পিছনে ফেলে দায়িত্ব পালন করি। ভুলে যাই খাওয়া-দাওয়া। মানুষের কথা বলি, মানবতার কথা বলি। ক্ষুধার্ত নিপীড়িত, অন্যায়, অবিচার, অপরাধের কথা তুলে ধরি। আবার সরকারের উন্নয়নের কথাও তুলে ধরি। আমরা আসলে তেল মাখতে পারিনা বলে মূল্যায়নের কদর পাই না। পারিনা চাপাবাজী, ধান্ধাবাজী, চাঁদাবাজী। তারপরেও দুর্নাম শেষ হয়না, সাংবাদিকের জায়গায় শুনতে হয় সাংঘাতিক। কারো কাছে হতে হয় হলুদ সাংবাদিক। এভাবেই একের পর এক শত অপবাদ-লাঞ্চনা মাথায় নিয়ে দিনের পর দিন অসহায় মানুষের কথা কথাভেবে তাদের পাশে দাঁড়াই। নির্লজ্জের মতো মাঠে কাজ করি। তুলে ধরি দুর্ভোগের চিত্র। সঠিক তথ্য দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরতে গিয়ে অনেক সময় নিজের পরিবারের কথাও ভাবা হয় না। নিজের আরাম আয়েশ এমনকি বিশ্রামও ঠিকভাবে করতে পারি ন। কারণ সাংবাদিকরা জাতির জাগ্রত বিবেক বলে কথা। তাই সব সময় জাগ্রত থাকতে হয়। আমি রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভের গণমাধ্যম। আমি অতি সামান্য হলেও একজন দায়িত্বশীল সচেতন নাগরিক।