মেসির জোড়া গোলে রক্ষা পেলো বার্সা

লিওনেল মেসির দুই গোলে শেষ পর্যন্ত লা লিগায় ভ্যালেন্সিয়ার সাথে ২-২ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বার্সেলোনা। এই নিয়ে কাতালান জায়ান্টদের হয়ে টানা নয় ম্যাচে গোল করার কৃতিত্ব দেখালেন মেসি। ক্যাম্প ন্যুতে আরো একবার বার্সার জন্য ত্রাণকর্তা হিসেবে উপস্থিত হয়েছিলেন এই আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। যদিও ইনজুরির কারণে বুধবার রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে কোপা ডেল রে ক্ল্যাসিকোতে তার খেলা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বার্সা কোচ আর্নেস্টো ভালভার্দে নিশ্চিত করেছেন ম্যাচ শেষে অধিনায়ক সামান্য সমস্যার কথা বললেও বিষয়টি ততটা গুরুতর নয়। যদিও ব্যস্ত সূচিকে সামনে রেখে ভালভার্দে দলের মূল তারকাকে নিয়ে কোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে চান না। মেসির অনুপস্থিতি সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য হলেও ভালভার্দে সেটা মেনে নিতে রাজী আছেন।

ক্যাম্প ন্যুতে গতকাল ২৪ মিনিটে কেভিন গামেইরোর গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ভ্যালেন্সিয়া। ৩২ মিনিটে ডানি পারেয়োর পেনাল্টিতে ব্যবধান দ্বিগুণ হয়। সাত মিনিট পর অবশ্য মেসির স্পট কিকে এক গোল পরিশোধ করে বার্সেলোনা। এরপর ৬৪ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে ম্যাচে সমতা ফেরান মেসি।

সপ্তাহের মাঝামাঝিতে সেভিয়ার বিপক্ষে দুর্দান্ত জয়ে কোপা ডেল রে’ তে টিকে থাকার পর লিগেও নিজেদের লিড ধরে রাখার মিশনেই কাল মাঠে নেমেছিল কাতালান জায়ান্টরা। কিন্তু উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচটিতে শেষ পর্যন্ত ভ্যালেন্সিয়া জিততে দেয়নি বার্সাকে। ম্যাচ শেষে ভালভার্দে বলেছেন, ‘যখন কোন দল জিততে পারবেনা না তখন সবসময়ই মনে হবে কিছু একটা ভুল ছিল। কিন্তু লিগের সময়টা অনেক দীর্ঘ। এখানে ভাল দলগুলোর বিপক্ষে সবসময় জয়ের আশা করা কঠিন। আজকের ম্যাচটা তেমনই একটা ম্যাচ ছিল।’

লিগে ২০ ও ২১তম গোল করে মেসি বাসার্কে যে এক পয়েন্ট উপহার দিয়েছেন তাতেই অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের থেকে ৬ পয়েন্ট এগিয়ে টেবিলের শীর্ষে রয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। তৃতীয় স্থানে থাকা রিয়াল মাদ্রিদের সাথে তাদের পয়েন্টের ব্যবধান এখন ১১। লা লিগায় টানা আট জয় তুলে নেয়ার পর ভ্যালেন্সিয়ার কাছে শেষ পর্যন্ত পয়েন্ট হারাতে হলো বার্সেলোনাকে। এবারের মৌসুমে লিগে মাত্র তিনটি জয় নিয়ে গত ডিসেম্বরে টেবিলের ১৫তম স্থানে ছিল ভ্যালেন্সিয়া। যে কারণে কোচ মারসেলিনো দারুণ চাপের মুখে ছিলেন। কিন্তু এক মাসের মধ্যে দলকে সপ্তম স্থানে টেনে তুলেন মারসেলিনো। গত ৯ ম্যাচে মেসি যেখানে একাই করেছেন ১২ গোল সেখানে পুরো ভ্যালেন্সিয়া দল মিলে লিগের প্রথম ১৫ ম্যাচে করেছে সমসংখ্যক গোল। যদিও ফলাফলের উন্নতিতে মারসেলিনোর উপর ক্লাবের আস্থা বেড়েছে। গত সাতটি ম্যাচে তারা মাত্র একটিতে পরাজিত হয়েছে।

কালকের ম্যাচের শুরুতেই গোল করার সুযোগ পেয়েছিল ভ্যালেন্সিয়া। কিন্তু পারেয়োর প্রচেষ্টা দারুণভাবে রুখে দেন মার্ক-আন্দ্রে টার স্টেগান। ফিরতি বলেও ডেনিশ চেরিশেভের শট পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। মিনিটখানেক পর ডি বক্সের ভিতর নেলসন সেমেডোর শট গ্যাব্রিয়েল পলিস্তার হাতে লাগলেও পেনাল্টির হাত থেকে রক্ষা পায় ভ্যালেন্সিয়া। উল্টো কাউন্টার অ্যাটাক থেকে রডরিগোর ৪০গজ দুরের পাসে গামেইরো ২৪ মিনিটে দলকে এগিয়ে দেন। ৩২ মিনিটে সার্জি পিছন দিক থেকে ড্যানিয়েল ওয়াসকে চ্যালেঞ্জ করলে নিশ্চিত পেনাল্টি পায় ভ্যালেন্সিয়া। স্পট কিক থেকে সফরকারীদের ব্যবধান দ্বিগুন করেন পারেয়ো। ৩৯ মিনিটে স্পট কিক থেকে বার্সেলোনাকে স্বস্তির গোল উপহার দেন মেসি।

বিরতির পরও ভ্যালেন্সিয়ার আক্রমণাত্মক কৌশলে বেশ কয়েকটি গোলের সুযোগ থেকে রক্ষা পেয়েছে স্বাগতিক বার্সেলোনা। বিশেষ করে ছয় গজ দুর থেকে রডরিগোর শটে গোল না পাওয়াটা ঠিল সত্যিই হতাশার। ৬৪ মিনিটে ভিডালের পাস থেকে মেসি কার্লিং শটে বার্সেলোনার পক্ষে সমতা ফেরান। দিনের শেষে এই এক পয়েন্টই বার্সা সমর্থকদের কাছে ছিল দারুন স্বস্তির।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top