নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার বাকরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী মিলে এ ঘটনায় জড়িত রাজন আহমেদ নামে এক যুবককে আটক করে স্থানীয় ইউপি সদস্য মাসুদ আহমেদের জিম্মায় রাখেন। পরে এলাকার লোকজনের সাথে পরামর্শ না করেই ওই যুবককে ছেড়ে দেওয়া হলে তিনি গা ঢাকা দেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিভাবক আইন উদ্দিন, সাইকুল মিয়া,সাদেক মিয়া, বাবুল মিয়া, মো. বকুল মিয়া, সাইফুল ইসলাম ও লাহুত মিয়া জানায়, প্রধান শিক্ষকের পরামর্শে সম্প্রতি ওই স্কুলের ১০৬ শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির টাকা তোলার মোবাইল সিম তার কাছ থেকেই কিনেন অভিভাবকরা। পাশাপাশি নগদ একাউন্ট করে দিয়ে কৌশলে গোপন পিন নম্বরটি নিজের কাছে রেখে দেন রাজন। পরে উপবৃত্তির টাকা ওই একাউন্টে আসলে তা তুলে নেয় রাজন। এক পর্যায়ে ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয়ভাবে বিচারের জন্য রাজনকে আটক করে মেম্বার মাসুদ আহমেদের কাছে রাখা হয়। মেম্বার কাউকে কিছু না জানিয়ে তাকে ছেড়ে দিয়ে বলে তোমাদের টাকা দিয়ে দেওয়া হবে। তাই বিচারের আর কিছু নাই। মেম্বার তার লোকজন দিয়ে কোন কোন অভিভাবকদের বাড়িতে গিয়ে ৩০০-৪০০ টাকা দিয়ে আসছেন। কাউকে এক টাকাও দিচ্ছেন না।
মাঘান-সিয়াধার ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য মাসুম আহমেদ বলেন, এলাকাবাসী রাজনকে আমার জিম্মায় রেখেছিল। সে এলাকার ছেলে একটা ভুল করেছে। সবার টাকা দিয়ে দেবে তাই তাকে ছেড়ে দিয়েছি।
বাকরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাজিয়া সুলতানা বলেন, অভিভাবকরা অনেকেই নিজেদের ব্যবহৃত সিমটি কার নামে রেজিস্ট্রেশন করা জানেন না। ফলে উপবৃত্তির টাকা নেয়ার জন্য নতুন সিম কিনতে বলেছি। তবে রাজনের কাছ থেকে মোবাইলের সিম কিনতে বলেছি এ অভিযোগ সত্যি নয়।
প্রায় দেড়শোর মতো শিক্ষার্থী থেকে এবার ১০৬ জনের মতো উপবৃত্তি পেয়েছে। আর রিপিটার ও যাদের জন্মনিবন্ধন নাই তারা পায়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির আহ্বায়ক মির্জা মোহাম্মদ বলেন, প্রধান শিক্ষককে সতর্ক করা হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে আলোচনার মাধ্যমেও সমাধানের চেষ্টা চলছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আরিফুজ্জামান বলেন, এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে ব্যবস্থা নিতে বলছি।