শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার ৯ নম্বর মরিচপুরান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা কৃষকলীগের আহ্বায়ক খন্দকার শফিকুল ইসলাম শফিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করা হয়েছে। শেরপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলাটি করেন উপজেলার মরিচপুরান মৌলভীপাড়া গ্রামের এক যুবতী নারী।
গত ২৫ মে শেরপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ভিকটিম। মামলা নম্বর ২১৬।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. আখতারুজ্জামান মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) জামালপুরকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
অপরদিকে উপজেলার গোড়াগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা কৃষকলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আজাদ মিয়ার বিরুদ্ধে তার নিজ গ্রাম পূর্ব আন্ধারুপাড়া এলাকার ৪০ বছর বয়সী এক নারী বিয়ের প্রলোভনে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করে চলেছে বলে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভিকটিমের বাবা না থাকায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার শফিকুল ইসলাম শফিক ওই নারীর বাড়িতে যাওয়া আসার কারণে পরিচয় হয়। এর সুবাদে আসামি ইউপি চেয়ারম্যান ওই নারীকে বিবাহের প্রলোভন দেখাতেন। চলতি বছরের ২০ মার্চ ইউপি চেয়ারম্যানের আমবাগান (ছিটপাড়া) গ্রামস্থিত বিল্ডিং বাড়িতে নিয়ে যান, সেখানে আগে থেকেই দুইজন অপরিচিত লোক অবস্থান করছিলেন। পরে অপরিচিত দুইজন লোকের মধ্য থেকে একজনকে কাজী পরিচয় দিয়ে একটি নীল কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ওই নারীর সঙ্গে প্রতারণামূলকভাবে বিবাহের বিশ্বাস জন্মিয়ে ২০ মার্চ রাত ১০টা থেকে চলতি বছরের ২ মে পর্যন্ত স্ত্রী হিসেবে ব্যবহার করিয়া ধর্ষণ করেন। পরে ৩ মে সকার ৯টার দিকে আসামি ইউপি চেয়ারম্যান ওই নারীকে তার বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন, এ সময় ওই নারীকে ইউপি চেয়ারম্যান সাফ জানিয়ে দেন যে তিনি তাকে বিয়ে করেননি।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, বিচারক মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) জামালপুরকে তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে বিষয়ে অভিযুক্ত আসামি ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার শফিকুল ইসলাম শফিকের মোবাইলে বার বার চেষ্টা করেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
এদিকে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আজাদ মিয়ার বিরুদ্ধে থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২০ বছর ধরে বিবাহের প্রলোভনে ৪০ বছরের এক নারীর সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক করে যাচ্ছেন পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আজাদ মিয়া। বার বার বিয়ের জন্য চাপ দিলেও বিয়ে করছেন না। এই অভিযোগ এনে নালিতাবাড়ী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই নারী।
অভিযোগে ওই নারী জানান ২০ বছর আগে থেকে ওই চেয়ারম্যান আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। সর্বশেষ বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টার দিকে উপজেলার পূর্ব আন্ধারুপাড়া এলাকায় চেয়ারম্যানের বাড়িতে আনা হয়। কিন্তু বিয়ে না করে ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে সারারাত ধরে ধর্ষণ করেন। এরপর বারবার বিয়ের জন্য চাপ দিলেও কোনো কাজ হয়নি। অবশেষে গত ১৫ জুন ওই ভিকটিম পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের বিষয়ে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তে প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে ইউপি অভিযুক্ত আসামি ইউপি চেয়ারম্যান আজাদ মিয়ার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাক্ষাতে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।