ময়মনসিংহে ছাত্রদলের সভায় পুলিশের লাঠিচার্জ-গুলিবর্ষণ : ৬ পুলিশসহ আহত ৩০

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ছাত্রদলের আলোচনা সভাকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে ছাত্রদলের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এসময় ৬ পুলিশসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে একটার দিকে ময়মনসিংহ নগরীর শম্ভুগঞ্জ চরকালী বাড়ী দাখিল মাদরাসা মাঠে এ ঘটনা ঘটে।

ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবু দাউদ রায়হান জানান, ময়মনসিংহ মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ, কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাকৃবি ছাত্রদলের উদ্যোগে নগরীর শম্ভুগঞ্জ দক্ষিণ চরকালিবাড়ি এলাকার একটি মাঠে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদৎ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি মাজেদুল ইসলাম রুমন জানান, মহানগরের বাইরে অনুষ্ঠানের জন্য পুলিশের অনুমতি ছিল। আলোচনা সভার শেষ পর্যায়ে পুলিশ এসে বিনা উসকানিতে সভা পন্ড করতে নেতাকর্মীদের ওপর ব্যাপক লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণ করে। এতে ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন।

স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে শম্ভুগঞ্জ চরকালী বাড়ী দাখিল মাদরাসা মাঠে ছাত্রদল সভার মঞ্চ তৈরী ও বেলা দশটার দিকে আলোচনা সভা শুরু করে। বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে সভা চলাকালে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে সভার মাইক ব্যবহার বন্ধ করে দেয় এবং দ্রুত সভা শেষ করতে বললে নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তোজনা দেখা দেয় এবং শ্লোগান দিতে শুরু করে। এক পর্যায়ে পুলিশ মঞ্চের দিকে এগিয়ে এলে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ মঞ্চ থেকে নেমে চলে আসে। এসময় পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। ছাত্রদলের কর্মীরা পুলিশের প্রতি ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ গুলিবর্ষণ করে। সংঘর্ষের ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি (তদন্ত) ফারুক হোসেন, ওসি (অপারেশন) ওয়াজেদ আলী, পুলিশ সদস্য চাঁন মিয়াসহ ছয় পুলিশ সদস্য এবং ঢাকা মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, যুগ্ম সম্পাদক মাজেদুর রহমান রুমন, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ইফতেখার আলম রাজু, বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নাইমুল করিম লুইন, মহানগর সাধারন সম্পাদক তানবীর আহমদ রবিন, দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মাহাবুবুর রহমান রানা, সাধারণ সম্পাদক আবু দাউদ রায়হান, উত্তর জেলার সভাপতি নিহাদ সালমান ডুনন, সাধারন সম্পাদক রায়হান শরীফ হলুদ, সহ-সভাপতি সাইফুজ্জামান সরকার শাওন, আনন্দ মোহন কলেজ ছাত্রদলের নেতা রাকিবুল ইসলাম রাকিব, ছাত্রনেতা মোমেনসহ ২৪ জন ছাত্রদল নেতাকর্মী আহত হন।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারন সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের পেটুয়া বাহিনী যতই নিপিড়ন নির্যাতন করুক না কেন ছাত্র-জনতার নেতেৃত্বেই এই ফ্যাসিষ্ট সরকারের পতন ঘটবেই ইনশাল্লাহ।

কোতয়ালী মডেল থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার জানান, করোনাকালীন সরকারি বিধি-নিষেধ অমান্য করে ছাত্রদল সমাবেশ করছিল। খবর পেয়ে পুলিশ সভা করতে বাঁধা দিলে ছাত্রদল কর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটজনকে আটক এবং ঘটনাস্থল থেকে ২০টি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। আহত পুলিশের দুই ওসিকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষের সময় পুলিশ ২৭ রাউন্ড শটগানের গুলিবর্ষণ করে বলেও জানান তিনি। ##

Share this post

scroll to top