যুক্তরাষ্ট্রের মিনেয়াপোলিসের রাস্তায় গত বছরের ২৫ মে আফ্রিকান-আমেরিকান নাগরিক জর্জ ফ্লয়েডকে গ্রেফতারের সময় তার গলার উপর ৯ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে হাঁটু গেড়ে বসে ছিলেন ৪৫ বছর বয়সি শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসার ডেরেক শভিন।\
এ সময় পুরো ঘটনাটি ক্যামেরাবন্দি করেন কিশোরী পথচারী ডারনেলা ফ্রেজিয়ার। তার ওই ভাইরাল হওয়া ভিডিওর কারণে অবশেষে ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনায় সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক শভিনকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছে মার্কিন আদালত।
তার এ অসীম সহসীকতা ও ‘বিশেষ সাংবাদিকতার’ জন্য পুলিৎসার পুরস্কার কমিটি তাকে পুরস্কৃত করেছে। খবর বিবিসির।
পুলিৎসার কমিটি বলেছে, ডারনেলা ফ্রেজিয়ার অত্যান্ত সাহসীকতার সঙ্গে সেদিন ভিডিওটি করেছেন বলেই পুলিশের ওই বর্বরতা নিয়ে বিশ্ববাসী সোচ্চার হয় এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে দোষি পুলিশ কর্মকর্তার বিচার হয়।
ফ্রেজিয়ার সেদিন তার নয় বছরের এক চাচাতো বোনকে নিয়ে ‘কাপ ফুডস্’ নামে এক দোকানে যাচ্ছিলেন। দোকানটা মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরে- তার বাসার বেশ কাছেই। পথে তিনি দেখতে পান পুলিশ কীভাবে ফ্লয়েডের গলা চেপে ধরেছে।
তিনি দাঁড়িয়ে যান। তার ফোন বার করেন এবং রেকর্ড বোতামে চাপ দেন।
পুরো দশ মিনিট নয় সেকেন্ড তিনি ভিডিওতে ছবি তোলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত পুলিশ অফিসাররা ও ফ্লয়েড সেখানে ছিলেন। পুলিশ অফিসাররা পায়ে হেঁটে স্থান ত্যাগ করে আর ফ্লয়েডকে স্ট্রেচারে করে নিয়ে যাওয়া হয়।
যখন কোন ভিডিও ভাইরাল হয়, সেই ভিডিওর বিষয়বস্তু যখন সংবাদ শিরোনাম হয়, তখন যে ওই ভিডিও তুলেছে তার নাম সংবাদের আড়ালে প্রায়শই ঢাকা পড়ে যায়।
যখন তিনি ভিডিও ক্যামেরা চালু করেন তখন ৪৬ বছর বয়স্ক জর্জ ফ্লয়েড দম নিতে না পেরে হাঁপাচ্ছেন, কাতর কণ্ঠে বারবার অনুনয় করছেন, প্লিজ, প্লিজ, প্লিজ।
তার ক্যামেরা তখন ছবি তুলছে বিশ সেকেন্ড ধরে। ফ্লয়েড এরপর আর যে তিনটি শব্দ উচ্চারণ করতে পেরেছিলেন, তা এখন বিশ্বজোড়া এক আন্দোলনের মূলমন্ত্র হয়ে উঠেছে।