আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে উত্তেজনা না থাকলে চলে। সেই কাজটি একাই করেছেন মোহামেডান অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। মুশফিককে আউট না দেয়ায় আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে প্রতিবাদে লাথি দিয়ে ভেঙেছেন স্টাম্প। পরে সেই স্টাম্প আবার আছাড়ও দিয়েছেন। সব মিলিয়ে সাকিব কাণ্ডে উত্তপ্ত মিরপুর।
ইতোমধ্যে নিজের কাণ্ডের জন্য ফেসবুকে ক্ষমাও চেয়েছেন সাকিব। কিন্তু তাতে হয়তো সব থামছে না। শাস্তি হয়তো পেতে পারেন সাকিব। কী শাস্তি সাকিবকে দেবে সিসিডিএম? তা নির্ভর করছে ম্যাচের দুই আম্পায়ারের প্রতিবেদন দেয়ার উপর। সেটা দেখেই পদক্ষেপ নেবে সিসিডিএম।
বিসিবির পরিচালক ও সিসিডিএম–প্রধান কাজী ইনাম আহমেদ যেমন বললেন, ‘এখানে ম্যাচ রেফারি, আম্পায়াররা একটা প্রতিবেদন দেবে। এখানে নিয়মনীতি যা থাকার, সবই আছে। নিয়ম ভাঙলে কী হয়, সেটাও সবাই জানে। যে প্রতিবেদনই আসুক, আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করব।’
সাকিব ম্যাচে যা দেখালেন, তা ক্রিকেট মাঠে দেখতে চান না সিসিডিএম–প্রধান, ‘ম্যাচের মধ্যে অনেক সময় ক্রিকেটাররা উত্তেজিত হয়। তবে আমরা অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের কাছে আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যাপারটি প্রত্যাশা করি। আমি নিজেও ছোটবেলা থেকে আবাহনীর সমর্থক। আবাহনী-মোহামেডান খেলা মানেই উত্তেজনা। তবে আজ মাঠের মধ্যে যা দেখেছি, তা হতাশাজনক। এখানে যারা খেলছে, সবাই পেশাদার ক্রিকেটার, অনেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। আমরা এমন উদাহরণ দেখাতে চাই না।’
ঘটনাটি ঘটে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে। মোহামেডানের ১৪৫ রানের জবাবে ইনিংসের পঞ্চম ওভারে আবাহনী অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের বিপক্ষে এলবিডব্লুর আবেদনে আম্পায়ার ইমরান পারভেজ সাড়া না দিলে মেজাজ হারিয়ে সাথে সাথে স্টাম্পে লাথি মারেন সাকিব।
এখানেই শেষ নয়। আবাহনীর ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে বৃষ্টি নামলে আম্পায়ার মাহফুজুর রহমান খেলা বন্ধ ঘোষণা করেন। তিনি যখন মাঠকর্মীদের কাভার আনার ইশারা দিচ্ছেন, তখন সাকিব আম্পায়ারের দিকে এগিয়ে গিয়ে তিনটি স্টাম্পই তুলে উইকেটের ওপর ছুড়ে মারেন। এরপর আবাহনী কোচ খালেদ মাহমুদের সাথেও হয় তার তর্কাতর্কি।
বৃষ্টি শেষে অবশ্য চিত্র ভিন্ন দেখা গেছে। আবাহনীর মুশফিক, মোসাদ্দেক ও অন্যান্য ক্রিকেটারের সাথে খুনসুটি করতে দেখা যায় সাকিবকে। যে আম্পায়ারের সাথে একটু আগেই ঝামেলায় জড়ান, তাদের সাথেই হেসে হেসে কথা বলছিলেন তিনি। তার পেছনেও হয়তো নিজ দলের জয়। কারণ বৃষ্টি আইনে মোহামেডান জেত ৩১ রানে।
সাকিব অবশ্য ফেসবুকে ক্ষমা চেয়ে বিষয়টি অনেক হালকা করেছেন। সমর্থন পাচ্ছেন ভক্তদের। সাকিবের ফেসবুকের স্ট্যাটাসের সারমর্ম হলো এমন, মেজাজ হারানোর জন্য ও ম্যাচ নষ্ট করার জন্য আমি সবার কাছে দুঃখপ্রকাশ করছি। আমার মতো একজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের উচিত হয়নি এভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো, কিন্তু কখনো কখনো দুর্ভাগ্যজনকভাবে সবকিছুর বিরুদ্ধে এরকম হয়ে যায়। আশা করি, ভবিষ্যতে আমি আর এরকম করব না। ধন্যবাদ ও ভালোবাসা সবার জন্য।