বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) উদ্ভাবিত চতুর্থ প্রজন্মের নতুন জাতের ‘সুবর্ণ রুই’ আনুষ্ঠানিকভাবে অবমুক্ত করা হয়েছে। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিএফআরআই সদর দপ্তরের স্বাদু পানি কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চ্যূয়ালী প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করে অবমুক্তির ঘোষণা দেন মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ। বিএফআরআই’র মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস আফরোজ, বিএফআরআই’র উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জোনায়রা রশিদ। অনুষ্ঠানে মৎস্য অধিদপ্তর ও হ্যাচারী মালিকদের হাতে ‘সুবর্ণ রুই’ মাছের পোনা ও ব্রুড মাছ হস্তান্তর করা হয়।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক জানান, স্বাদুপানির অন্যতম প্রধান মৎস্য প্রজাতি হচ্ছে রুই। বাংলাদেশে চাষযোগ্য মাছের মধ্যে রুই সবচেয়ে বাণিজ্যিক গুরুত্বসম্পন্ন মাছ। দেশে উৎপাদিত মাছের মধ্যে রুই মাছের উৎপাদন প্রায় চার লাখ মেট্রিক টন। রুই মাছের চাহিদা ও উৎপাদনের কথা মাথায় রেখে ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা জেনেটিক গবেষণার মাধ্যমে রুই মাছের চতুর্থ প্রজন্মের নতুন জাতটি উদ্ভাবন করেছেন। এই জাতটি দ্রæত বর্ধনশীল, স্থানীয় জাতের চেয়ে ২০.১২% অধিক উৎপাদনশীল, খেতে সুস্বাদু এবং দেখতে লালচে ও আকর্ষণীয়। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে রুই মাছের চতুর্থ প্রজন্মের নতুন জাতটির নামকরণ করা হয়েছে ‘সুবর্ণ রুই’। এ মাছটি চাষী, হ্যাচারী মালিক ও উদ্যোক্তাদের কাছে বিশেষ গুরুত্ব পাবে এবং মাঠ পর্যায়ে দ্রæত সম্প্রসারিত হবে। এতে সামগ্রিকভাবে দেশে প্রায় ৮০ হাজার কেজি মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। তিনি জানান, বর্তমানে মৎস্যচাষ প্রায় সম্পূর্ণভাবে হ্যাচারী উৎপাদিত পোনার উপর নির্ভরশীল। কিন্তু, হ্যাচারীতে উৎপাদিত কার্প জাতীয় মাছের কৗলিতাত্তি¡ক অব²য় ও অন্ত:প্রজননজনিত সমস্যা মৎস্যচাষ উন্নয়নে অন্যতম একটি অন্তরায়। এই সমস্যা হতে উত্তরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিটিউটে কৌলিতাত্তি¡ক গবেষণার মাধ্যমে রুই মাছের নতুন এই উন্নত জাত উদ্ভাবন হয়েছে। এক্ষেত্রে যমুনা, ব্রহ্মপুত্র ও হালদা নদীর প্রাকৃতিক উৎসের রুই মাছ ব্যবহার করা হয়েছে। এ মাছের গায়ের রং লালচে হওয়ায় দেখতে অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও অন্ত:প্রজনন সমস্যামুক্ত। মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে এ জাত অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে বিজ্ঞানীরা আশা করছেন। ##