টঙ্গীর উত্তরা শাহিন ক্যাডেট স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্র তৌসিফুল ইসলাম মুন্না হত্যাকাণ্ডের দুই বছর পর রহস্য উদঘাটন করলো গাজীপুরের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই। এঘটনায় ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট থানার চকমোকামিয়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন (২৫)সহ জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ থানার জাকিরপাড়ার উসমান আলীর ছেলে মোফাজ্জল (৩১)।
এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুই গত আসামি সোমবার রাতে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। গ্রেফতারকৃতরা এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে মঙ্গলবার গাজীপুর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধী দিয়েছে।
আসামি আনোয়ার স্থানীয় গাজীপুরা নাসির শিকদারের বাড়িতে ও মোফাজ্জল মুক্তার হাজীর বাড়িতে ভাড়া থাকতো। সোমবার ভোর রাতে তাদেরকে নিজ নিজ ভাড়া বাসা থেকে গ্রেফতা করা হয়।
পিবিআই গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান আসামিদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে জানান, ঘটনার দিন সকাল অনুমান ৯টায় বাসায় ভিকটিমের মা-বাবা না থাকার সুযোগে ভিকটিম তৌসিফুল ইসলাম মুন্নাকে ডেকে দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে এবং মোবাইল ও ক্যামেরা লুট করার সময় ভিকটিম বাধা দেয়। এ সময় আসামিরা মুন্নাকে নির্মমভাবে গলাকেটে ও পেটে পোচ দিয়ে নাড়িভুড়ি বের করে হগত্যা করে। পরে আসামিরা ঘরের স্টীলের আলমিরা ভেঙ্গে একটি ডিজিটাল ক্যামেরা ও মোবাইল সেট নিয়ে নেয়। মূলত চুরি করার উদ্দেশ্যেই ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেন আসামিরা। তাদেরকে চিনে ফেলায় ভিকটিম তৌসিফুল ইসলাম মুন্নাকে হত্যা করা হয়।
উল্লেখ্য, তৌসিফুল ইসলাম মুন্নাদের পরিবার গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পূর্ব থানাধীন গাজীপুরা সুমন মার্কেট সংলগ্ন চন্দ্রিমা হাউজিংয়ের জনৈক হাবিবুর রহমানের পাঁচ তলা বাড়ির চার তলায় ভাড়া থাকতেন। গত ১৮-০৭-২০১৯ তারিখ সকাল পৌনে ৮টায় ভিকটিম তৌসিফুল ইসলাম মুন্নাকে (১৪) বাসায় একা রেখে তার মা মোছা: হামিদা আক্তার মুকুল ছোট সন্তান তামিমকে নিয়ে স্থানীয় আবু তালেব মডেল একাডেমিতে যায় এবং এর আগেই সকাল ৭টায় মুন্নার বাবা মিজানুর রহমান জাহাঙ্গীর তার কর্মস্থল ঢাকার বনানীর উদ্দেশ্যে রওনা দেন। মুন্নার মা হামিদা আক্তার সকাল সোয়া ১০টায় তার ছোট সন্তান তামিমসহ স্কুল থেকে ফিরে এসে বাইরে থেকে ফ্ল্যাটের দরজা আটকানো অবস্থায় পায় এবং ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেই তার সন্তান তৌসিফুল ইসলাম মুন্নাকে বেডরুমে খাটের ওপর উপুর হয়ে রক্তাক্ত ও মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার দেয়। এ ঘটনায় মুন্নার বাবা টঙ্গী পূর্ব থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। থানা পুলিশ এ হত্যাকাণ্ডের কোনো ক্লু উদঘাটন করতে না পারায় অবশেষে গাজীপুর পিবিআই পুলিশকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়।
পিবিআই ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বিপিএম(বার), পিপিএম এর তত্ত্বাবধানে পিবিআই গাজীপুর ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমানের সহযোগিতায় জেলা পিবিআই পুলিশ পরিদর্শক মো: হাফিজুর রহমান পিপিএম মামলাটি তদন্ত করেন।