ময়মনসিংহে মজা ভেকির বিল পাড়ে কৃষকের মুখে হাসি : পেয়েছে আধুনিক জীবনের ছোঁয়া

Khal-in-Mymensinghমজা ভেকির বিল পাড়ের কৃষকের মুখে হাসি ফুঁটেছে। ক্ষুধা দারিদ্রতাকে জয় করে বিলপাড়ের পরিবারে গুলোতে এসেছে মাছ ভাতের নিশ্চয়তা। স্বাচ্ছন্দ আর আধুনিক জীবন যাপনের সব সুযোগ এখন তাদের হাতের নাগালে। বিলপাড়ের প্রায় পনর হাজার কৃষক উপকৃত হয়েছেন। প্রকল্প এলাকায় জমির উৎপাদন বেড়েছে ২০/২৫ শতাংশ হারে । সব কিছুই সম্ভব হয়েছে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার “মজা ভেকিরবিল” ঘিড়ে ২০২০/২০২১ অর্থ বছরে “সমম্বিত পানি সম্পদ ইউনিটের ” “সেচ ও নিকাশ কার্যক্রমের” আওতায়। সরকারী ও স্বেচ্চাশ্রমের মাধ্যমে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক দলের অংশগ্রহনে বিভিন্ন উপ প্রকল্প সমুহের রক্ষনাবেক্ষেবেন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে ময়মনসিংহ এলজিইডি। ভেকির বিল অন্যতম একটি সফল উদাহরণ। এই ছয় উপপ্রকল্পের খরচ হয়েছে এক কোটি ১৭ লক্ষ দশ হাজার টাকা।

ময়মনসিংহের সদর উপজেলার মজা ভেকির বিল এক সময় কৃষকের জন্য ছিল চীনের হোয়াংহোর মত। বৃস্টি হলেই সৃষ্টি হত জলাবদ্ধতার। সেই জলাবদ্ধতায় আশে পাশের ফসলী জমি পানিতে সয়লাব হয়ে বিনষ্ট হতো কৃষকের সোনালি ধানের সবুজ স্বপ্ন। আমন বোরো ফসল ভেসে যেত।ব্যহত হতো মাছ চাষ।ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন উপ-প্রকল্পের মাধ্যমে সেই বিলের পানি ব্যবস্থাপনায় আধুনিকায়ন করে কৃষি উৎপাদনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। ভেকির বিলের আশেপাশের প্রায় পনর হাজার কৃষক পেয়েছ আধুনিক সমৃদ্ব জীবনের নিশ্চয়তা। চলমান ৬টি উপ-প্রকল্পে ৩৮টি শ্রমিকদলের প্রায় এক হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। জেলার এরকম আরো ৩৪টি প্রকল্প এলাকায় ২৮ হাজার খানা পরিবার মিলে প্রায় আড়াই লক্ষ কৃষক উপকৃত হয়েছেন। টোটাল প্রকল্পের আওতায় আসা ২২ হাজার হেক্টর বোরো ধানের জমিতে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ হারে দুই হাজার ছয়শত পণ্চাশ মেট্রিক টন ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সংশ্লিষ্ট জনপদের কৃষকদের আর্থসামাজিক অবস্থার অভুতপুর্ব উন্নতি হয়েছে ।

“সমম্বিত পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইউনিটের” সেচ ও নিকাশ কার্যক্রমের আওতায় ২০/২১ অর্থ বছরে ছয়টি উপপ্রকল্পের রক্ষনাবেক্ষন করা হয়েছে। ময়মনসিংহ জেলায় চুক্তিবদ্ধ শ্রমিকদলের মাধ্যমে ভেকির বিল খালের তিন হাজার ৭শ মিটির, বাপাইল চেংগুয়া খালের দুই হাজার আট”শ মিটার পলি অপসারন, ফুলবাড়িয়ার সালনার খাল প্রায় পনর”শ মিটার বাধ মেরামত, ৬৯ মিটার প্যালাসাইডিং , গুজাকুঁড়ি খাল, দুই হাজার পচাত্তর মিটার বাধ মেরামত এক’শ বার মিটার প্যালাসাইডিং , ধোবাউড়ার সাতারখালী খাল ২৫০ মিটার বাঁধ মেরামত, ২৫০ মিটার প্যালাসাইডিং করা হয়েছে । কোথাও সংরক্ষিত পনি দিয়ে সেচ সুবিধা বৃদ্ধি, কোথাও জলবদ্ধতা দুরিকরণ ও পানি নিস্কাশন ও বন্যা থেকে ফসল রক্ষার ফলে কৃষি উৎপাদনে উপপ্রকল্প এলাকার প্রায় ৪৭ হাজার কৃষক সুবিধাভোগি হয়েছেন। অন্যদিকে ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহারে ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলনের চাপ এবং কৃষকের উৎপাদন খরচ কমেছে। রক্ষা হচ্ছে পরিবেশ প্রতিবেশ। কৃষকের দারিদ্র বিমোচন ও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্যই প্রকল্পের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো শহিদুজ্জাসান খান বলেন, জলাবদ্ধতা নিস্কাশন ও ভুপৃষ্টের সংরক্ষিত পানি ব্যবহারে কম খরচে উৎপাদন বৃদ্ধি, দারিদ্র বিমোচনই প্রকল্পের প্রধান উদ্যেশ্য। পানি নিস্কাশনের ভেকির বিলে ছয় লাখ বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছের পোনা অবমুক্ত করে কৃষকের আমিষের যোগান বৃদ্ধি করা হয়েছে। সরকারের কৃষিবান্ধব ও খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসুচী নিশ্চিত করতে কৃষি ক্ষেত্রে এ ধরনের উপপ্রকল্প চাহিদা মত প্রতি অর্থ বছরেই চলমান থাকবে রক্ষনাবেক্ষেন কার্যক্রম, জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

Mymensingh-Moja-Bekhir-Bil

Share this post

scroll to top