বাঘ ঢুকে পড়েছে শহরে, এদিক সেদিক দৌড়াদৌড়ি করছে সেটি, কখনোবা আক্রমণ করছে বাসিন্দাদের। আবার বাসিন্দারাও পিছু লেগেছেন সেটিকে ধরতে। এই নিয়ে টানা কয়েক ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনা শহরজুড়ে। ঘটনাটি ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় পাঞ্জাব প্রদেশের জলান্ধর শহরের। তবে শেষ পর্যন্ত সেটিকে ধরতে সক্ষম হয়েছে প্রাণীউদ্ধার কর্মীরা।
অন্তত চারজনের ওপর আক্রমণ করেছে চিতা বাঘটি। শহরের গলিতে গলিতে দৌড়াদৌড়ি করেছে বাঘটি। আসলে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে সেটিও ভীত হয়ে পড়েছিল। তার ওপর চারদিকে লোকের ভীড় দেখে আতঙ্কিত হয়ে ছুটতে শুরু করে। এ সময় সামনে পেয়ে অনেকের ওপর হামলে পড়ে সেটি। এই নিয়ে জলান্ধর শহরের ৮ লাখ বাসিন্দা বৃহস্পতিবার টানা ছয় ঘণ্টা কাটিয়েছে উত্তেজনার মধ্যে।
অনলাইনে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, লোকজন চারপাশ থেকে বাঘটিকে দেখার জন্য ভীড় করেছে, কয়েকজন জাল দিয়ে সেটিকে আটকাতে চেষ্টা করছে আর বাঘটি পালাতে গিয়ে এ গলি থেকে ও গলিতে দৌড়াদৌড়ি করছে। কখনো কখনো উচু দেয়াল লাফিয়ে টপকে গেছে বড় বাঘটি। এক পর্যায়ে বাঘটি এক ব্যক্তিকে জাপটে ধরে, যদিও তিনি ছুটে পালাতে সক্ষম হয়েছেন আবার। যাদের আক্রমণ করেছে বাঘটি সবার আঘাতই গুরুত্বর বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, কৌতুহলি হয়ে যারা বাঘটিকে দেখতে গেছেন তাদের মধ্যে কয়েকজন আক্রমণের শিকার হয়েছেন। অনেকে বাঘের গায়ে পাথর ছুড়েছেন। বাঘটি শহর ছেড়ে পালাতে চাইছিল। কিন্তু যেদিকেই যায় লোকের ভীড় দেখে সেটি আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
পাঞ্জাব প্রদেশের বন্যপ্রাণী বিষয়ক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাঘটি পাশ্ববর্তী হিমাচল প্রদেশের পাহাড়ি এলাকা থেকে এসেছে। বন থেকে বেড়িয়ে সেটি অনেক পথ পাড়ি দিয়ে জলান্ধার শহরে এসেছে। তারা প্রথমে জাল দিয়ে বাঘটিকে ধরতে চেয়ে ব্যর্থ হয়ে শেষে ট্রাঙ্কুয়ালাইজারের গুলিতে সেটিকে অচেতন করে ধরতে সক্ষম হয়।
কর্মকর্তারা বলছেন, জনগনের অতিরিক্ত ভীড়ের কারণে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে এবং তাদের অভিযানও বিলম্বিত হয়েছে। এক পর্যায়ে পুলিশ জনগনকে রুখতে বেশ কিছু রাস্তা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে।
বাঘটিকে ছাতবীর চিড়িয়াখানায় নেয়া হয়েছে। কয়েকদিন পশু চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে থাকার পর সেটির ভবিষ্যতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
দেখুন সেই ঘটনার ভিডিও