ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামীলীগের উদ্যোগে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ও ভাষাসৈনিক এম শামসুল হকের ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকীতে কুরআনখানি, দোয়া মাহফিল ও স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধায় ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলমের সভাপতিত্বে শহরের এডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত স্মরণায়োজনে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এমপি, সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী কে. এম. খালিদ এমপি, গৌরিপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দীন আহমেদ এমপি, গফরগাঁও এর ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল এমপি, ভালুকার সংরক্ষিত মহিলা আসনের মনিরা সুলতানা মনি এমপি, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটু, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম ফেরদৌস জিল্লু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হোসেন জাহাঙ্গীর বাবু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর শহীদ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ ও তার অংগ-সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা একুশে পদক জয়ী মো: শামছুল হককে স্মরণ করে অতীত স্মৃতি কাতর হয়ে অনেকেই আবেগাপ্লত হন। তাদের মতে, শামছুল হক আওয়ামীলীগের একজন ত্যাগী নেতা। যার অবদান ময়মনসিংহ আওয়ামীলীগ কৃতজ্ঞচিত্তে মনে রাখবে। তিনি যেমন বঙ্গবন্ধুর সহচর ছিলেন, ঠিক তেমনি তিনি বঙ্গবন্ধু তনয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত লড়াকু সৈনিক ছিলেন।
উল্লেখ্য, মরহুম এম শামসুল হক ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার কামারিয়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৩০ সালের ২৯ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় তিনি ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজে উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্র ছিলেন। ভাষা আন্দোলনে যোগ দেয়ায় তাকে ময়মনসিংহ শহরের স্টেশন রোড থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এ সময় তিনি ছয় মাস কারারুদ্ধ থাকেন।
একুশে পদক জয়ী মো: শামছুল হক ’৬৬-এর ছয় দফা, ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধসহ জীবদ্দশায় সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭০ সালের তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন ময়মনসিংহ-১৫ আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৮৬ সালের তৃতীয়, ১৯৯১ সালের পঞ্চম ও ১২ জানুয়ারি, ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ময়মনসিংহ-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
২০০৪ সালের ২৭ মে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। ভাষা আন্দোলনে অসামান্য অবদান রাখায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এম শামসুল হককে ২০২১ সালে একুশে পদক (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়।