ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ এর প্রভাবে ভোলায় মেঘনা-তেতুলিয়ার নদীর পানি বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে ঝুুঁকির মধ্যে পড়েছে কয়েকটি ইউনিয়নের নিন্মাঞ্চলে বসবাসরত প্রায় ৩০ হাজার মানুষ।
এদিকে আজ দুপুর ২টা থেকে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরফ্যাসন উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে লোকালয়ে পানি ঢুকে মানুষের বাড়িঘর ডুবে গেছে।
চরফ্যাসন উপজেলার দক্ষিণ আইচা, মুজিবনগর, নীলকমলের চর যমুনা, নজরুল নগর, কুকরী-মুকরি, ঢালচর ও চরপাতিলাসহ বেশ কয়েকটি এলাকার প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
রেডক্রিসেন্ট সূত্রে জানা গেছে, তাপমাত্রা অনেকটা কমে যাওয়ায় রাত ৯টা নাগাদ তাদের রার্ডার চিত্রে দেখা যাচ্ছে ঘণ্টায় এখন বাতাসের গতিবেগ ৬০-৭০ কিলোমিটার। গভীর রাতে বাতাসের গতিবেগ বাড়তে পারে। রাতে হঠাৎ পানির উচ্চতাও বেড়ে যাওয়ায় উপকূলের মানুষের জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
আবহাওয়া দপ্তর থেকে বলা হয়েছিল ইয়াসের আঘাত তেমন শক্তিশালি হবে না।বাংলাদেশের উপকূলে আঘাতের তেমন সম্ভবনা নেই। লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়ার প্রয়োজন নেই। এর ফলে মানুষ বাড়ি ঘর থেকে বের হয়নি। প্রবল বাতাসে লোকলয়ে পানি ঢুকে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে মানুষ। আগে থেকে তাদেরকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হলে এত দুর্ভোগ পোহাতে হতোনা।
সর্বশেষ জানা গেছে পানিবন্দীদের উদ্ধারে প্রশাসন রাতে তৎপর হয়েছে। এদিকে পার্শ্ববর্তী মনপুরা উপজেলার উত্তর সাকুচিয়া পয়েন্টে একটি পুরাতন বাঁধ ধসে গেছে। তবে বিকল্প বাঁধ থাকায় লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেতে পারেনি।
বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ইউনিয়ন ঢালচরের চেয়ারম্যান আবদুল সালাম হাওলাদার জানান, হঠাৎ করেই পানি বাড়তে থাকায় চরে থাকা অন্তত ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। জোয়ারে মানুষের বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় উচু স্থানে যাওয়ার পথ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। রাতে পানি আরো বৃদ্ধির আশঙ্কায় ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় কোস্ট ট্রাস্টের দোতালায় ও পুলিশ ফাঁড়ির ভবনে নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়া হচ্ছে।
ভোলা জেলা প্রশাসক তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরীর বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ চরগুলোতে আটকে পড়া বাসিন্দাদের উদ্ধারে ইতিমধ্যে কোস্টগার্ড ও জেলা উপজেলা প্রশাসনের দুটি ইউনিট কুকরি ও ঢালচরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবেলায় ভোলা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবধরনের গ্রহণ করা হয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে ভোলা জেলায় সকাল থেকে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হয়েছে।