ভালো নেই নেত্রকোনায় বসবাসরত ভাসমান বেদেপল্লির পরিবারগুলো। কোনো কাজ না থাকায় অলস সময় কাটাতে হচ্ছে তাদের। এ ছাড়া বসবাসের স্থায়ী কোনো জায়গা না থাকায় ভাসমান অবস্থায় যখন যেখানে সুযোগ হয় সেখানেই থাকতে হয় তাদের।
নেত্রকোনা সদর উপজেলার চল্লিশা ইউনিয়নের চল্লিশা বাজার সংলগ্ন রেলগেইট এলাকায় বেদেপল্লির ১৫টি পরিবার বসবাস করছে। তাদের মধ্যে পুরুষরা বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে তাবিজ দেওয়াসহ কবিরাজি করে যা আয় হয় তাই দিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে দিনযাপন করে। এ ছাড়া নারীরা বিভিন্ন ম্যাজিক ও সাপের খেলা দেখিয়ে অর্থ উপার্জন করে দিনাতিপাত করছে। কিন্তু বর্তমানে করোনায় বাইরে যেতে না পেরে খেয়ে না খেয়ে কোনো রকমে দিনযাপন করছে বেদেপিল্লর বাসিন্দারা। এতে বিপাকে পড়েছে ওই পরিবারগুলো। শুধু তাই নয়, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বসবাসরত ভাসমান বেদে পরিবারগুলোরও একই অবস্থা।
উপজেলার চল্লিশায় বসবাসরত বেদেপল্লির সর্দার মো. ফরহাদ মিয়া জানান, সাভার থেকে নেত্রকোনায় এসে প্রায় তিন মাস ধরে বসবাস করছেন তারা। বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে কবজ, তাবিজসহ কবিরাজি করে কিছু অর্থ উপার্জন করে পরিবার-পরিজন নিয়ে চলতেন। কিন্তু করোনায় তারা কোথাও যেতে পারছেন না। এতে খেয়ে না খেয়ে কষ্ট করে দিন চলছে তাদের। তারা সরকারি সহযোগিতাসহ স্থায়ীভাবে বসবাস করার দাবি জানান।
বেদেপল্লির মারুফা বেগম জানান, গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি গিয়ে বিভিন্ন ধরনের ম্যাজিকসহ বানর নাচ দেখাতেন তারা। এতে অনেকেই খুশি হয়ে ধান, চালসহ নগদ টাকা দিত। কিন্তু করোনায় এখন তারা গ্রামেগঞ্জে যেতে পারছেন না। দিন কাটাচ্ছে বেদেপল্লিতেই। এতে তাদের সংসার চালানো খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমান জানান, করোনাকালীন জেলার অসহায়দের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহার খাদ্যসামগ্রী ও নগদ টাকা বিতরণ করা হচ্ছে। তারই আলোকে বেদেপল্লির লোকজনের মাঝেও খাদ্যসামগ্রী ও নগদ টাকা দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য উপজেলার বেদেপল্লির লোকদেরও সহযোগিতা করা হবে।