শিক্ষাবর্ষ বাদ দিয়ে এবারের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে বিবেচনায় আনা হয়েছে বয়সকে। সে হিসেবে প্রার্থীদের বয়স হবে ৩০ বছর। একই বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে ভোটারদের ক্ষেত্রেও। অনার্সে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে বিশ্বদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন এমন শিক্ষার্থীরা এর আওতায় পড়বেন। সে ক্ষেত্রে অধিভুক্ত ও উপাদান কল্পের প্রতিষ্ঠান এবং সান্ধ্যকোর্সের শিক্ষার্থীরা ভোটার ও প্রার্থী কোনোটাই হতে পারবেন না। এ ছাড়া ডাকসুর সভাপতির মতার ভারসাম্যের বিষয়ে ছাত্রসংগঠনগুলোর প্রস্তাবনা আমলে নিয়েছে সিন্ডিকেট। দু’টি ছাত্রসংগঠন ছাড়া বাকি সব ছাত্রসংগঠনের দাবি থাকলেও সেটি আমলে না নিয়ে হলেই রাখা হচ্ছে ভোটকেন্দ্র।
গত রাতে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের (ঢাবি) সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। সিন্ডিকেট সভা শেষে সংবাদ সম্মলন করে এসব কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো: এনামউজ্জামান। তিনি বলেন, যেসব শিার্থী প্রথমবর্ষ স্নাতক সম্মান শ্রেণীতে ভর্তি পরীার মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং এমফিল পর্যায়ে অধ্যয়নরত আছে এবং যারা বিভিন্ন আবাসিক হলে আবাসিক অনাবাসিক শিার্থী হিসেবে সংযুক্ত রয়েছে এবং নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখে যাদের বয়স কোনোক্রমেই ৩০-এর অধিক হবে না কেবল মাত্র তারাই ডাকসু ও হল ছাত্র সংসদের ভোটার হতে পারবেন।
সব ভোটারই প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা রাখে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা সান্ধ্যকালীন বিভিন্ন কোর্স, প্রোগ্রাম, প্রফেশনাল এক্সিকিউটিভ, স্পেশাল মাস্টার্স, ডিপ্লোমা, এমএড, পিএইচডি, ডিবিএ, ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্স, সার্টিফিকেট কোর্স অথবা এ ধরনের অন্যান্য কোর্সে অধ্যয়নরত আছেন তারা ভোটার হতে পারবেন না।
তবে ৩০ বছরের ঊর্ধ্বে শিার্থীরা যে কোর্সেই অধ্যয়নরত থাকেন না কেন তারা ভোটার হতে পারবেন না। সরকারি বেসরকারি অথবা দেশে বা বিদেশে যেকোনো প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোনো শিার্থী ভোটার হতে পারবেন না।
অধিভুক্ত ও উপাদানকল্প প্রতিষ্ঠানের কোনো শিার্থী ভোটার হতে পারবেন না।
ভোটকেন্দ্র নিয়ে তিনি বলেন, গঠনতন্ত্রে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট আবাসিক হলে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের সুপারিশ, প্রস্তাব এবং সময়ের চাহিদা বিবেচনা করে কয়েকটি সম্পাদক পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এ ছাড়া ডাকসুর সভাপতির মতার ভারসাম্যের প্রস্তাবনাটিও সিন্ডিকেট বিবেচনায় নিয়েছে। সিন্ডিকেটের কার্যাবলি অনুমোদন হওয়ার পর বিষয়টি সম্বন্ধে বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ২১ জানুয়ারি ঢাবির পরিবেশ পরিষদের সভায় বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জাসদ) ছাড়া বাকি ১২টি ছাত্রসংগঠনের পক্ষ থেকে হলের বাইরে ভোটকেন্দ্র রাখার দাবি জানানো হয়। এ ছাড়া একই দাবিতে কর্মসূচি দিয়েছে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলো। সর্বশেষ গতকাল সিন্ডিকেটে হলেই ভোটকেন্দ্র রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
এ দিকে ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের দুই অধ্যাপকের ইচ্ছাকৃত নম্বর হেরফেরের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে শৃঙ্খলা কমিটি। এ বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী নয়া দিগন্তকে বলেন, তাদের বিষয়টি দেখবে তদন্ত কমিটি। কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু মো: দেলোয়ার হোসেনকে আহ্বায়ক করে গঠিত এ তদন্ত কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন : শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন এবং রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জিনাত হুদা। উল্লেখ্য, ঘটনার দীর্ঘদিন পার হলেও এই দুই অধ্যাপকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের কালক্ষেপণের অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনের ব্যাঘাত ঘটার আশঙ্কা করছেন অনেকে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভিসি অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামান বলেন, তদন্ত কমিটি বিষয়টি দেখবে।