যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের একটি ছবি তুলেছেন বার্তা সংস্থা এপির ফটোগ্রাফার। গত সোমবার হোয়াইট হাউজে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় তোলা ছবিতে দেখা গেছে বুকের কাছে রাখা হতে নোট বুক ও কলম। কিন্তু এটি একটি সাধারণ ছবিই ছিলো অন্যসব দিনের মতো। কিন্তু ছবিটি আলোচনায় এসেছে অন্য কারণে।
জন বোল্টনের হাতে থাকা নোট বুকে লেখা একটি বাক্য ছবিটিকে ঘিরে সবার কৌতুহল তৈরি করেছে। বাক্যটি এরকম ‘ কলম্বিয়ায় যাবে ৫ হাজার সৈন্য’।
সোমবার হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের সাথে আলাপ করার সময় বোল্টনের হাতে ছিলো হলুদ রঙয়ের নোটবুকটি। ব্রিফিং শেষে উঠে যাওয়ার সময় ছবিটি তোলা হয়েছে। তাতে পরপর দুটি লাইন লেখা, আর দ্বিতীয় লাইনটিকে নিয়ে এত আলোচনা। এদিন সাংবাদিকদের সাথে ভেনিজুয়েলা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন বোল্টন। ভেনিজুয়েলায় চলছে রাজনৈতিক সঙ্কট। সেখানে বিরোধী দলীয় নেতা হুয়ান গুয়াইদোকে দেশটির অন্তবর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তুরস্ক, রাশিয়াসহ অন্য অনেক দেশ স্বীকৃতি দিয়েছে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে।
প্রসঙ্গত বোল্টনের নোটবুকের প্রথম লাইনটি লেখা ছিল- ‘আফগানিস্তান….. সংলাপকে স্বাগত’। দেশটিতে তালেবানের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের আপোসের কথা চলছে। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে বর্তমান বিশ্বের দুটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু আফগান পরিস্থিতি আর ভেনিজুয়েলা পরিস্থিতি নিয়ে দুটি বাক্য লেখা ছিলো বোল্টনের নোটবুকে।
বোল্টনের এই নোটবুকের সূত্র ধরে ধারণা করা হচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্র ভেনিজুয়েলার প্রতিবেশী দেশ কলম্বিয়ায় ৫ হাজার সেনা পাঠাতে যাচ্ছে। সেখান থেকে ভেনিজুয়েলায় সামরিক অভিযান চালাতে পারে দেশটি। যদিও এ সব কিছুই ধারণা করা হচ্ছে ওই বাক্যটি দেখে। এর স্বপক্ষে কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমরা এমন কোন তৎপরতা দেখছি না যা ওই বাক্যের সমর্থনে যায়।’
তবে ব্রিফিংয়ে জন বোল্টন ভেনিজুয়েলায় সেনা পাঠানোর বিষয়ে কিছু বলেননি। তবে তিনি বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট আমাদের কাছে এটি স্পষ্ট করেছেন যে এ বিষয়ে সবগুলো অপশনই বিবেচনায় রয়েছে’।
এ বিষয়ে বার্তা সংস্থা এএফপির পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক বাহিনীর দক্ষিণ কমান্ডের সাথে যোগাযোগ করা হলে কোন কর্মকর্তা মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ভেনিজুয়েলায় গত কয়েকদিন ধরেই চলছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। বিরোধী দল বিগত নির্বাচনে অংশগহণ করেনি। তাদের দাবি নতুন গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের। অন্য দিকে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো চাইছেন ক্ষমতায় থেকেই দেশ পরিচালনা করতে। নিয়ে কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ করছে বিরোধী দল। বিরোধী দল বর্তমানে দেশটির পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ। বিরোধী নেতা হুয়ান গুয়াইদো নিজেকে অন্তবর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করেছন। তাকে সমর্থন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কিছু দেশ।
তাই দেশটির রাজনৈতিক ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা। যুক্তরাষ্ট্র কলম্বিয়ায় সেনা মোতায়েন করলে তাতে নতুন মোড় নিবে দেশটির পরিস্থিতি।