উদ্বোধনের দুই বছরের মধ্যে তুরস্কের বৃহত্তম মসজিদে ভ্রমণ করেছেন মোট এক কোটি ২০ লাখ পর্যটক। ইস্তাম্বুলের এশিয়ান অংশে চামলিজা পাহাড়ে অবস্থিত সেলজুক-উসমানিয়া স্থাপত্যরীতিতে তৈরি চামলিজা মসজিদে পর্যটকদের সফরের এই হারের কথা সোমবার তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির প্রকাশিত এক খবরে জানানো হয়।
ইস্তাম্বুলের মসজিদ ও সাংস্কৃতিক স্থাপনার নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ক সংস্থার প্রধান এরগিন কুলুনক আনাদোলু এজেন্সিকে জানান, ২০১২ সালে প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান প্রথম এই মসজিদ তৈরির ঘোষণা দেন। ২০১৯ সালের ৭ মার্চ মসজিদে প্রথম নামাজ আদায় করা হয়। ওই বছরের ৩ মে মসজিদটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়।
এরগিন কুলুনক বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম চামলিজা মসজিদ ইস্তাম্বুলের নতুন প্রতীকে পরিণত হবে। এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই আমরা তার বাস্তবায়ন লক্ষ্য করছি।’
উদ্বোধনের পর থেকে তুরস্ক ও বহির্বিশ্ব থেকে বহু পর্যটক মসজিদটি দেখতে আসার কথা উল্লেখ করে কুলুনক বলেন, বর্তমানে ইস্তাম্বুলের অন্যতম এক পর্যটন আকর্ষণ এই মসজিদটি।
তিনি বলেন, প্রথম বছর প্রায় এক কোটি পর্যটক মসজিদটি দেখতে আসে। পরের বছর করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি সত্ত্বেও এই সংখ্যা এক কোটি ২০ লাখে পৌঁছায়।
কুলুনক বলেন, ধারণক্ষমতার দিক থেকে মসজিদটি তুরস্কের বৃহত্তম মসজিদ। এর অভ্যন্তরে একইসাথে ২৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবে। অন্যদিকে বাহিরের আঙিনাসহ মোট ৬৩ হাজার মুসল্লি একত্রে এই মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারবেন।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের ব্যবস্থায় নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব অনুশীলনের মধ্যে পাঁচ-ছয় হাজার মুসল্লি প্রতি জুমায় এই মসজিদে নামাজ আদায় করছেন।
কুলুনক বলেন, আবহাওয়া আরো উষ্ণ হলে তারা মসজিদের বাহির আঙিনা নামাজের জন্য খুলে দেবেন। তখন মোট আট থেকে ১০ হাজার মুসল্লি জুমার নামাজ আদায় করতে পারবেন।
ছয় মিনারের এই মসজিদটির প্রধান চারটি মিনার দৈর্ঘ্যে ১০৭.১ মিটার (৩৫২ ফুট) লম্বা। মিনারের এই দৈর্ঘ্য আনাতোলিয়ায় তুর্কিদের আগমনের সূচনাকারী ঘটনা ১০৭১ সালের মালাজগির্দ যুদ্ধকে নির্দেশ করছে। অপরদিকে ৭২ মিটার (২৩৬ ফুট) উঁচু কেন্দ্রীয় গম্বুজ তুরস্কে বাস করা ৭২ জাতিগোষ্ঠীর লোককে ইঙ্গিত করছে।
মসজিদটির সাথে বর্তমানে আটটি আর্ট ওয়ার্কশপ, একটি আর্ট গ্যালারি, একটি লাইব্রেরি, ১০৭১ আসনের একটি কনফারেন্স হল এবং তিন হাজার পাঁচ শ’ ধারণক্ষমতার একটি গাড়ি পার্কিংয়ে স্থান রয়েছে। শিগগির এখানে ‘তুরস্কের ঐতিহ্যগত ও আধুনিক যুক্তিকে সমন্বয়কারী’ জাদুঘর চালু করা হবে বলে জানান এরগিন কুলুনক।
সূত্র : ইয়েনি শাফাক