মুন্সীগঞ্জ সদরের চরাঞ্চল চরকেওয়ার ইউনিয়নের ছোট মোল্লাকান্দি ও খাসকান্দি গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত দু’পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে।
শুক্রবার বিকেল থেকে গতকাল শনিবার সকাল পর্যন্ত কয়েক দফায় হামলা-পাল্টা হামলা ও সংঘর্ষের সময় শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ, গুলিবর্ষণ ও বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
সর্বশেষ শনিবার ভোরে খাসকান্দি গ্রামের সামছুদ্দিন হাওলাদার পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষ নজির হাওলাদার পক্ষের লোকজনের ওপর ছোট মোল্লাকান্দি গ্রামে হামলা চালাতে যায়। তবে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে থাকায় এতে ব্যর্থ হয় তারা। গ্রেপ্তার এড়াতে দু’পক্ষের লোকজন আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় গতকাল সকাল থেকে পুরুষশূন্য রয়েছে দুই গ্রাম।
গ্রামবাসী জানিয়েছে, এ সংঘর্ষের নেপথ্যে রয়েছে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তার। গত এক বছরে দু’পক্ষের মধ্যে আট দফা সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত এবং অর্ধশতাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। গত বছর আলুর ট্রলি ওঠানো-নামানো এবং ড্রেজার ব্যবসাকে কেন্দ্র করে ছোট মোল্লাকান্দি ও খাসকান্দি গ্রামের হাওলাদার গোষ্ঠী ও বেপারী গোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধের সূত্রপাত। পরে খাসকান্দি গ্রামের হাওলাদার গোষ্ঠী দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে বিরোধে জড়ায়।
গ্রামবাসী ও পুলিশ জানায়, এক পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সামছুদ্দিন হাওলাদার ও মজিবুর বেপারী এবং অপর পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন নজির হাওলাদার ও মামুন হাওলাদার। আর নেপথ্যে এক পক্ষকে সমর্থন দিচ্ছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আফসারউদ্দিন ভূঁইয়া ও তার ছেলে সাদী ভূঁইয়া এবং অপর পক্ষকে সমর্থন দিচ্ছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও চরকেওয়ার বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান জীবন।
জানতে চাইলে আফসারউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, আসন্ন ইউপি নির্বাচনে তার ছেলে চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় পরাজয়ের ভয়ে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান একটি পক্ষকে সমর্থন দিয়ে ইউনিয়নের শান্ত পরিস্থিতি অশান্ত করে তুলেছেন।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে আক্তারুজ্জামান জীবন বলেন, আফসারউদ্দিন ভূঁইয়া ও তার ছেলে ইউনিয়নকে বোমাবাজির আখড়া বানিয়ে ফেলছেন।
সদর থানার ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, সংঘর্ষের পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একাধিক ককটেল উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে বিস্ম্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করেছে।
জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন জানান, শনিবার দু’পক্ষের নেতৃত্বে থাকা আওয়ামী লীগ নেতা আফসারউদ্দিন ভূঁইয়া ও আক্তারুজ্জামান জীবনের সঙ্গে পৃথকভাবে আলোচনা হয়েছে। তাদের দু’জনকে উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশকে সহযোগিতার জন্য বলা হয়েছে।