তদানীন্তন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের লিডার অব দ্যা হাউজ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি খান-এ-সবুর এর ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, ৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট দেশ বিভাগের পরও যখন বর্তমান খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরার কিছু অংশ হিন্দুস্থানের অন্তর্ভুক্ত ছিল তখন সবুর খান বাউন্ডারি কমিশনে আপিলের মাধ্যমে এ অঞ্চল পাকিস্তানে অন্তর্ভুক্তিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। তার একক প্রচেষ্টায় ১৭ই আগস্ট ১৯৪৭ বিকালে রেডিও ইন্ডিয়াতে ঘোষণা করা হয় যে উল্লেখিত অঞ্চল পাকিস্তানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। যারই ধারাবাহিকতায় এ বিশাল অঞ্চল পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশের অংশ হয়েছে। মূল্যায়নের মাপকাঠিতে বৃহত্তর খুলনা অঞ্চল পাকিস্তানে তথা বাংলাদেশে অন্তর্ভূক্তি একজন রাজনীতিবিদ হিসাবে খান এ সবুরের সবচাইতে বড় সাফল্য।
বাংলাদেশ মুসলিম লীগের উদ্যোগে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে, পল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সভাকক্ষে ‘রাজনীতির একাল সেকাল’ শীর্ষক মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বক্তারা আরও বলেন, আজন্ম ত্যাগী এ মহামানব তার সমুদয় সম্পত্তি ‘খান-এ-সবুর ট্রাস্ট’ গঠন করে জনহিতকর কাজের জন্য দান করে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। তার ঢাকার বাসভবনটিতে এখন বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মৃত্যুর পূর্বে নিজের সমস্ত সম্পদ জনকল্যাণে বিলিয়ে দিয়ে মূলত তিনি রাজনৈতিক আদর্শিক গুরু নবাব স্যার সলিমুল্লাহর পদাঙ্কই অনুসরণ করে গেছেন। তার অবদান কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেই কৃতজ্ঞ খুলনাবাসী ১৯৭৯ সালের সংসদ নির্বাচনে তাকে ৩টি আসনে নির্বাচিত করে এবং তার মৃত্যুর দশ বছর পর ভালবাসা থেকেই শহরের প্রধান সড়কটির নামকরণ করা হয়েছিল খান-এ-সবুর রোড। আজীবন মুসলিম জাতিসত্তার সৈনিক, খুলনার আপামর জনসাধারণের দেয়া উপাধি ’সাহেব’ নামের এই মহান নেতা অবশ্যই বর্তমান কলুষিত রাজনীতির জন্য একটি অনুকরণীয় আদর্শ।
মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের বলেন, দেশের গণতন্ত্র দেউলিয়া হয়ে গেছে, প্রার্থীরা পর্যন্ত নিজের ভোট নিজে দিতে পারবে কিনা এরকম দোলাচলে দুলছে। এরকম দেশের স্বপ্ন দেখে নবাব সলিমুল্লাহ, খান-এ-সবুররা মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করেননি। সভাপতির বক্তব্যে আতিকুল ইসলাম বলেন, হতাশ হওয়ার কিছু নেই, মৌলিক রাজনীতি আবারও দেশে ফিরে আসবে। হয় জনগণই ফিরিয়ে আনবে না হয় সময়ের প্রয়োজনে নিজ থেকেই পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন আবুড়ী, অতিরিক্ত মহাসচিব আকবর হোসেন পাঠান, কাজী এ.এ কাফী, সাংগঠনিক সম্পাদক এস.এইচ খান আসাদ, কোষাধ্যক্ষ শহুদুল হক ভুঁইয়া, দফতর সম্পাদক খোন্দকার জিল্লুর রহমান, আইন সম্পাদক এ্যাড এ.কে.এম আশরাফুল আলম, এ্যাড আফতাব হোসেন মোল্লা, মাকসুদুর রহমান মাষ্টার, সৈয়দ আব্দুল হান্নান নূর, শরীফ মোঃ মিরাজ হোসাইন, এ্যাড হাবিবুর রহমান, আবদুল খালেক, রুনা লায়লা, মামুনুর রশীদ, আবদুল আলিম, সাইফুল ইসলাম প্রমুখ। সভা শেষে মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়, দোয়া পরিচালনা করেন ইসলামী ঐক্যজোটের কেন্দ্রীয় নেতা আনছারুল হক ইমরান।