হেফাজতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দায়ের করা মামলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের অন্যায়ভাবে জড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, বর্তমান সরকারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে কর্তৃত্ববাদী, নির্যাতনকারী, একনায়কতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা বারবার বলেছি সরকার বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে সকল বিরোধী দলকে ধ্বংস করে দিয়ে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে চাচ্ছেন। যার ফলে পুরো নির্বাচন ব্যবস্থাকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। মোটকথা বর্তমান সরকারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে কর্তৃত্ববাদী নির্যাতনকারী একনায়কতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা। যা ১৯৭০ এর পর থেকে এ পর্যন্ত এদেশের মানুষ কখনো মেনে নেয়নি এবং নেবে না।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘গত ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও গুলি নিক্ষেপ করে। এতে চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অনেক মানুষের মৃত্যু হয়। এর প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালের দিনে পুলিশ ও সরকারদলীয় নেতাকর্মীর হামলায় আরো ২০ জন প্রাণ হারায়।
ওসব ঘটনা কেন্দ্র করে পুলিশ বাদী হয়ে যেসব মামলা করেছে সে সব মামলা সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে বিএনপি, এর সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতাকর্মীর নাম জড়িয়ে তাদেরকে গ্রেফতার ও হয়রানি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের জানামতে সারাদেশে এ পর্যন্ত ১৭৯ জন বিএনপি নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ১৮১ জনকে। গ্রেফতারের পর অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন একজন। আমরা এ সকল মিথ্যা মামলা প্রদান এবং অন্যায়ভাবে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এ সময় তিনি আরো বলেন, এই সংবাদ সম্মেলন থেকে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবী করছি। অন্যথায় এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে এর কড়া মূল্য দিতে হবে।
সরকার হেফাজতকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে বিএনপি নেতাদের মামলা জড়াচ্ছেন কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি প্রথমেই বলেছি সরকার একটি কর্তৃত্ববাদী একনায়কতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে সকল বিরোধী শক্তির উপর নির্যাতন চালাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে শুরুর দিকে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কোভিড-১৯ এর আক্রমণে ইতিমধ্যে দেশের অনেক বরেন্য ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন এবং অনেকে আক্রান্ত হয়ে এখন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আমরা মৃত্যুবরণকারীর সকলের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি এবং অসুস্থদের সকলের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। এ সময় তিনি আরো বলেন, আপনারা জানেন আমাদের চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া করোনায় আক্রান্ত। তবে তার মারাত্মক কোন উপসর্গ দেখা যায়নি। আমরা আশাকরি দেশবাসীর দোয়ায় তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন।