যে সিরিজে জুয়াড়ির কাছ থেকে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়ার কথা গোপন করেছিলেন সাকিব আল হাসান, সেই সিরিজেই তথ্য ফাঁস করেছিলেন জিম্বাবুয়ের তৎকালীন কোচ হিথ স্ট্রিক। এমন অনৈতিক কাজ জিম্বাবুয়ের সাবেক কিংবদন্তি পেসার করেছেন আরও। যেসব অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় আট বছরের জন্য আইসিসি নিষিদ্ধ করলো তাকে।
শুধু ওই সিরিজেই না, জিম্বাবুয়ে-আফগানিস্তান সিরিজ, বিপিএল, আইপিএল, এপিএলের ম্যাচ পাতাতে জুয়াড়িদের সহায়ক হতে পারে, দলের এমন তথ্য ফাঁস করে দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত স্ট্রিক এবং দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
২০১৯ সালে ক্রিকেট থেকে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন সাকিব। তিনবার জুয়াড়িদের কাছ থেকে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব পেলেও আইসিসির দুর্নীতি বিরোধী ইউনিটকে না জানানোয় শাস্তি পেয়েছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা। সাকিবে ওপর নিষেধাজ্ঞা ইস্যুতে আইসিসির পাঠানো ই-মেইলে বলা হয়েছিল, সাকিবের পরিচিত কেউ জুয়াড়ি দীপক আগরওয়ালকে বাংলাদেশি বেশ কিছু ক্রিকেটারের ফোন নম্বর দিয়েছিলেন।
কিন্তু সেই ব্যক্তিটি কে? তার পরিচয় প্রকাশ করেনি আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী ইউনিট (এসিইউ)। সেই ঘটনা ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে। বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার ত্রিদেশীয় সিরিজে দুইবার ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন সাকিব। ওই সিরিজে জিম্বাবুয়ের কোচ হয়ে ঢাকায় এসেছিলেন স্ট্রিক। বিভিন্ন সূত্রে খবর, সাকিবের ফোন নম্বর আগাওয়ালকে দিয়েছিলেন স্ট্রিকই! শুধু তাই নয়, সাকিব, তামিম ও আরও দুই একজন ক্রিকেটারের সঙ্গে আগারওয়ালকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন।
আইসিসি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার বলে, ‘জাতীয় দলের একজন অধিনায়কসহ মোট চারজন ক্রিকেটারকে তিনি (স্ট্রিক) এমন একজনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন, যিনি জুয়াড়ি হতে পারেন।’
প্রসঙ্গত, ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ দলের বোলিং কোচ ছিলেন ৪৭ বছর বয়সী সাবেক এ পেসার। স্বাভাবিকভাবেই ক্রিকেটারদের সঙ্গে তার ওঠাবসা ও সখ্যতা ছিল দারুণ। আগারওয়ালের সঙ্গে স্ট্রিকের সম্পর্ক দেড় বছরের। ওই সময়গুলোতেই নানা তথ্য আদান-প্রদান করেছেন তিনি। যেগুলো সরাসরি ম্যাচ পাতানোর সঙ্গে জড়িত।
২০১৮ সালে আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বোলিং কোচের দায়িত্ব পান জিম্বাবুয়ের ইতিহাসে অন্যতম সেরা এ ক্রিকেটার। সেখানেও দলের তথ্য পাচার করেছিলেন স্ট্রিক। এছাড়া ২০১৭ বিপিএল, ২০১৮ সালের পাকিস্তান সুপার লিগ ও আফগান প্রিমিয়ার লিগ এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ম্যাচে একই অনৈতিক কাজ করেছিলেন স্ট্রিক।
সাকিবের পাশাপাশি আগারওয়াল প্রস্তাব করেছিলেন তামিমকেও। তবে বাঁহাতি ওপেনার তাৎক্ষণিক বিষয়টি বিসিবির দুর্নীতি দমন কর্মকর্তাকে জানান এবং এ ব্যাপারে ঢাকার একটি হোটেলে তামিমকে তলব করেছিল সাকিবের ঘটনার তদন্তে থাকা দলটি। সাকিব ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেয়ে না জানিয়ে অপরাধ করে শাস্তি পেয়েছেন। সেখানে তামিম ছিলেন বাড়তি সচেতন।