বাংলাদেশের মানুষ না খেতে পেয়ে ভারত যাচ্ছে: অমিত শাহ

বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষ না খেতে পেয়ে ভারত চলে যাচ্ছে বলে মনে করেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যে আনন্দবাজারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই দাবি করেছেন তিনি। তার মতে বাংলাদেশের উন্নয়ন হলেও তার সুফল বড়লোকদের কাছে পৌঁছেছে, সীমান্ত এলাকার গরিব মানুষদের কাছে নয়। সেই কারণেই অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটছে বলে মনে করেন তিনি।

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাজ্যটির ক্ষমতা দখল করতে মরিয়া হয়ে প্রচার চালাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। প্রায় প্রতিদিনই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে নির্বাচন প্রচারে অংশ নিচ্ছেন তারা। এই নির্বাচন ঘিরে পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশকে বড় ইস্যু বানিয়েছে বিজেপি।

আনন্দবাজারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অমিত শাহ বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন সীমান্ত এলাকায় নিচুতলায় পৌঁছায়নি। পিছিয়ে পড়া যে কোনও দেশে উন্নয়ন হতে শুরু করলে সেটা প্রথম কেন্দ্রে হয়। আর তার সুফল প্রথমে বড়লোকদের কাছে পৌঁছায়, গরিবদের কাছে নয়। এখন বাংলাদেশে সেই প্রক্রিয়া চলছে।’ তিনি বলেন, ফলে গরিব মানুষ এখনও খেতে পাচ্ছে না। সে কারণেই অনুপ্রবেশ চলছে। আর যারা অনুপ্রবেশকারী, তারা যে শুধু পশ্চিমবঙ্গেই থাকছে, তা নয়। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। জম্মু-কাশ্মীর পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে।’

পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় আসলে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কোন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে তাও জানান অমিত শাহ। তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা শুধু এই রাজ্যের নয়, গোটা দেশের জন্য চিন্তার। আগামী ১০ বছর পর কলকাতার নাগরিকও অনুপ্রবেশ থেকে বাঁচতে পারবে না।’ তিনি বলেন, ‘কেউ সীমান্ত পেরিয়ে এলে কোথায় থাকে? কারা তাদের আশ্রয় দেয়? বিএসএফ সীমান্তে নজরদারি করে। কিন্তু যদি কেউ ভিতরে ঢুকে পড়ে, তা হলে কে দেখবে? গরুপাচার কেন বন্ধ করা যাচ্ছে না? আমরা আসামে এই বাস্তুতন্ত্রটা হাতেকলমে করেছি। বেড়ার উপর ক্যামেরা লাগিয়েছি। তার সংযোগ পুলিশ থানায় দিয়েছি। জেলাশাসক, বিএসএফ এবং থানা— তিন পক্ষের উপরেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ক্যামেরার ফুটেজ দেখার জন্য। সেই কারণেই অনুপ্রবেশ কমে ১০ শতাংশ হয়ে গেছে। এটা প্রমাণিত তথ্য। পশ্চিমবঙ্গেও এটা করতে হবে।’

অমিত শাহ পরিষ্কার করে বলেন পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ক্ষমতায় এলে এসে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের মাধ্যমে শরণার্থীদের সম্মানজনক ভাবে বাঁচার অধিকার দেব। এর ফলে বাংলার জীবনযাত্রারও অনেক পরিবর্তন হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও ভাল হবে। তিনি বলেন, ‘অনুপ্রবেশকে এত কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ করা হবে যে, পরিষ্কার বার্তা যাবে এখন অনুপ্রবেশ করা সহজ নয়।’

Share this post

scroll to top