রাজধানীর গণপরিবহনে অনিয়ম ও ভাড়া নৈরাজ্য

রাজধানীর গণপরিবহনে যাত্রীদের সঙ্গে ড্রাইভার-কন্ডাক্টরদের বাগযুদ্ধ, ধাক্কাধাক্কি, হাতাহাতি নতুন কোনো ঘটনা নয়। ভাড়া নিয়ে প্রায়ই এ ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটছে। তবে লকডাউনে এর মাত্রা কয়েকগুণ বেড়েছে। আর এর প্রধান কারণ, বেশি ভাড়া আদায়, অনিয়ম ও খারাপ আচরণ।

রাজধানীর বিভিন্ন রুটের যাত্রীদেরই অভিযোগ, বাস কন্ডাক্টররা লকডাউনে সরকার ঘোষিত ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়ার চেয়েও বেশি ভাড়া আদায় করছেন । যাত্রাবাড়ি রুটের একজন বাসযাত্রী জানালেন- কাজলা থেকে গুলিস্তানের পূর্বের ভাড়া ছিল ১০ টাকা। ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়লে তা দাঁড়ায় ১৬ টাকা। অথচ যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে ২০ টাকা। আবার এক সিট ফাঁকা না রেখে দুই সিটে যাত্রী নিয়েও বর্ধিত ভাড়াই নেওয়া হচ্ছে। এনিয়ে হর হামেশা ঘটছে অনাকাঙ্খিত ঘটনা। যাত্রীদের সঙ্গে বাসের স্টাফদের যুদ্ধাবস্থা তৈরি হচ্ছে। এমন ঘটনা প্রায় প্রতিদিন ঘটলেও তা দেখার যেন কেউ নেই।

যাত্রীরা বলছেন, এসব নিয়ে কোথাও অভিযোগ করারও যেন জায়গা নেই।

অন্যদিকে বাসের স্টাফদেরও অভিযোগ, তারা সঠিক ভাড়াই নিচ্ছেন। বরং ভাড়া তুলতে গিয়ে তারা প্রায়ই যাত্রীদের হাতে হেনস্তা হচ্ছেন। কখনো কখনো যাত্রীরা তাদের গায়ে হাত তুলছে বলেও অভিযোগ তাদের।

এ প্রসঙ্গে আলাপকালে রাজধানীর মৌমিতা পরিবহনের কন্ডাক্টর মিলন বলেন, পেটের দায়ে এত কষ্ট শিকার করি। ভাড়া ঠিকমতো না তুললে ড্রাইভার-মালিকের গালি শুনতে হয়। আবার ন্যায্য ভাড়া নিতে গেলেও লাঞ্ছিত হতে হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, রোববার বিকেলে মৌমিতা পরিবহনের একটি বাস চাষাড়া থেকে ছেড়ে আসে। কাজলা থেকে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ফ্লাইওভার পার হয় বাসটি। এরপর আবারও বাসে যাত্রী তোলা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হন যাত্রীরা। তারা বলছেন, যদি সরকার নির্ধারিত যাত্রীর চেয়ে ওরা বেশি যাত্রী নেয়, তাহলে আগের ভাড়া নিবে। ওরা তো তা করছে না। ভাড়াও বেশি নিচ্ছে, আবার যাত্রীও নিচ্ছে আসন ভরে। এ নিয়ে বাসের কন্ডাক্টরের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডা হয় যাত্রীদের। একপর্যায়ে এক যাত্রী কন্ডাক্টরকে বাস থেকে নামিয়ে মারতে শুরু করেন। এ সময় অন্য যাত্রীরা তাকে নিবৃত্ত করেন।

ক্ষুব্ধ যাত্রী বলেন, শনিরআখড়া থেকে আমরা দুইজন বাসে উঠেছি। ভাড়া নিয়েছে ৪০ টাকা করে। বাসের আসন খালি রাখছে না, যাত্রী তুলছে। আবার ভাড়াও কম নিচ্ছে না। ওরা যদি বাস ভরেই যাত্রী নিবে তাহলে আমাদের কাছ থেকে আগের ভাড়া নিক। তা তো ওরা করছে না। আসলে ওদের লোভ বেশি।

জিজ্ঞাসা করলে বাসের চালক মো. রাব্বানী বললেন, নিউমার্কেট যাওয়ার পর বাসটি ফাঁকা হয়ে যাবে। এজন্য কন্ডাক্টর কয়েকজন যাত্রী বেশি নিয়েছেন।

Share this post

scroll to top