তাহলে কী চ্যাম্পিয়নের দৌড় শুরু হল জিদানের রিয়াল মাদ্রিদের? সেটার উত্তর মিলবে আর কয়েক সপ্তাহ পরই। তবে খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়ানো রিয়াল মাদ্রিদ কিন্তু সাম্প্রতিক অতীতে একাধিকবার ভয়ংকর অভিজ্ঞতা উপহার দিয়েছে নিকটতম প্রতিপক্ষদের।
মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকো হারের বদলা নিয়ে লিগ শীর্ষে যাওয়ার এক দারুণ সুযোগ এদিন বার্সেলোনার সামনে ছিল। কিন্তু বৃষ্টিস্নাত আলফ্রেদো দি স্তেফানোতে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ রোনাল্ড কোম্যানের ছেলেরা। গতকাল শনিবার (১০ এপ্রিল) মৌসুমের দ্বিতীয় এল ক্লাসিকোতেও বাজিমাত করে গেল রিয়াল মাদ্রিদ।
বেনজেমার দর্শনীয় গোল এবং টনি ক্রুজের ফ্রি-কিকে বার্সেলোনাকে ২-১ পরাজিত করে দীর্ঘ কয়েক সপ্তাহ পর লা-লিগার শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধার করল রিয়াল মাদ্রিদ। চোট এবং কোভিড-১৯ এর কারণে স্কোয়াডে ছিলেন না রামোস, ভারানে, কোভাচিচ, হ্যাজার্ডরা। কিন্তু চলতি সপ্তাহেই লিভারপুলকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিতে হারানোর আত্মবিশ্বাসকে সঙ্গী করে মগজাস্ত্রের লড়াইয়ে কোম্যানকে টেক্কা দিলেন জিদান।
প্রথম একাদশের দুই সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার রামোস, ভারানের পরিবর্তে লিভারপুল ম্যাচের মতোই মিলিতাও, ন্যাচোকে নিয়েই এদিন লড়াইয়ে নামেন জিদান। তবে একাদশে বেনজেমার মতো একজন গোলস্কোরার থাকলে বোধহয় কোচেদের কাজ অনেক সহজ হয়ে যায়। এদিন জিদানের ক্ষেত্রেও তাই হল।
ম্যাচের ১৩ মিনিটে লুকাস ভ্যাসকুয়েজের মাটি ঘেঁষা ক্রস থেকে বিপক্ষ ডিফেন্ডার এবং গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে ম্যাজিকাল ব্যাকহিলে ১-০ করেন ফরাসি স্ট্রাইকার। এই নিয়ে টানা সাতটি লিগ ম্যাচে গোল করে ভ্যান নিস্তেলরুই, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো এবং গ্যারেথ বেলদের সঙ্গে একাসনে বসে গেলেন বেনজেমা। এরপর বার্সেলোনার উপর দ্বিতীয় গোলের বোঝা চাপিয়ে দেন টনি ক্রুজ।
২৮ মিনিটে বক্সের সামান্য বাইরে থেকে জার্মান মিডফিল্ডারের সেটপিস বিপক্ষ এক ফুটবলারের গায়ে প্রতিহত হয়ে জালে জড়িয়ে যায়। গোললাইনে দাঁড়িয়ে জর্ডি আলবা প্রতিরোধের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। প্রথমার্ধে যোগ্য দল হিসেবেই ২-০ ব্যবধান তৈরি করে লকাররুমে যায় লস ব্ল্যাঙ্কোসরা। তবে শেষদিকে কর্নার থেকে মেসির শট পোস্টে প্রতিহত না হলে কী হত বলা মুশকিল।
দ্বিতীয়ার্ধে বার্সেলোনার মধ্যে মরিয়া প্রচেষ্টা তাদের একমাত্র গোলটি এনে দেয় ম্যাচে। ৬০ মিনিটে জর্ডি আলবার বামপ্রান্তিক ক্রস বক্সে ডামি করেন গ্রিজম্যান। বল গিয়ে পৌঁছায় এল ক্লাসিকোয় অভিষেক হওয়া অস্কার মিঙ্গেজার কাছে। চলতি বলে স্প্যানিশ ডিফেন্ডারের জোরালো ভলি কুর্তোয়াকে পরাস্ত করে জালে জড়িয়ে যায়। এরপর সমতা ফেরানোর লক্ষ্যে রবার্তো, ব্রাথওয়েট, ত্রিনকাও, মোরিবাদের নামিয়ে আরও আক্রমণাত্মক ছকে চলে যান কোম্যান। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। ক্যাশেমিরো ৯০ মিনিটে জোড়া হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লেও দ্বিতীয়বার রিয়াল রক্ষণ ভাঙতে পারেনি বার্সেলোনা।
এ জয়ের ফলে ৩০ ম্যাচে ৬৬ পয়েন্ট নিয়ে লিগ শীর্ষে চলে গেল রিয়াল। এক ম্যাচ কম খেলে সমসংখ্যক পয়েন্ট নিয়েও গোল পার্থক্যে দ্বিতীয়স্থানে অ্যাটলেটিকো। রবিবার (১১ এপ্রিল) তাদের কাছে সুযোগ ফের শীর্ষে যাওয়ার। অন্যদিকে, ৩০ ম্যাচে ৬৫ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয়স্থানে বার্সেলোনা।