কাজের চাপে ছুটি পেতেন না তিনি। বাড়িতে কিডনির অসুখে আক্রান্ত স্ত্রীকে দেখার কেউ নেই। বাধ্য হয়েই স্ত্রীকে ‘খুন করার’ অনুমতি চেয়ে চিঠি লিখলেন ব্যাংক ম্যানেজার। ‘দাহ-সংস্কার’ শেষ করে ফের কাজে যোগ দেবেন বলেও জানালেন তিনি। একই সাথে সেই চিঠির কপি পাঠালেন দেশের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীকে। এরপর সাথে সাথে ছুট মঞ্জুর হয়ে যায়।
বিহারের বক্সার জেলায় দক্ষিণ বিহার গ্রামীণ ব্যাংকের বকসড়া শাখার ম্যানেজার মুন্না প্রসাদ। মুন্না প্রসাদ জানিয়েছেন, এর আগে বার বার ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ছুটির জন্য আবেদন করেছেন তিনি। স্ত্রীর অবস্থা দিনের পর দিন খারাপ হলেও চিকিৎসার জন্য তাকে ছুটি দেওয়া হচ্ছিল না। এমনকি প্রতিদিন ব্যাংকে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছিল। তাতেই মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্থ হয়ে পড়েন তিনি।
শেষ পর্যন্ত গত ১৯ জানুয়ারির আবেদনপত্রে স্ত্রীকে খুন করে দাহ-সংস্কারের জন্যে দু’দিনের ছুটির আবেদন করেন। চিঠি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছুটি মঞ্জুর করেন কর্তৃপক্ষ। এরপরেই ছুটিতে গিয়েছেন মুন্না প্রসাদ। শীঘ্রই কাজে যোগ দেবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
তবে মুন্না প্রসাদের আবেদনের জেরে ব্যাংক জুড়ে হই হই শুরু হয়েছে। দ্রুত ছুটি মঞ্জুর করে মুন্না প্রসাদকে বাড়ি পাঠিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। মুন্না প্রসাদের আবেদনে চাপের মুখে ব্যাংক কর্মকর্তারা। যদিও তাদের বক্তব্য, চাপ তৈরি করে ছুটি নিতে চেয়েছেন ম্যানেজার। মুন্নার অভিযোগও মানতে চাননি ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট জোনাল ম্যানেজার যোগেন্দ্রনাথ সিংহ।
তিনি বলেন, ‘‘মুন্না প্রসাদ যখনই ছুটির আবেদন করেছেন তা মঞ্জুর করা হয়েছে। এবারেও তাই হয়েছে। তবে চিঠিতে তিনি এমন কেন লিখলেন তা জানি না। পারিবারিক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে তিনি যদি ট্রান্সফার চান তাহলে তা বিবেচনা করা হবে।’’
যদিও ব্যাংকেরই এক সূত্র স্বীকার করেছেন, এমনিতেই কর্মী সংখ্যা কম। তার উপরে ধান কেনার মওসুমে চাপ থাকে। সে কারণে কয়েক মাস ধরেই ব্যাংকে অলিখিত ছুটি না নেওয়ার নিয়ম চালু করা হয়েছিল। তার জেরে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছিলেন শাখার কর্মীরা। আর তাতেই ক্ষুব্ধ হয়ে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন মুন্না প্রসাদ।