যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাস শহরের একটি বাড়ি থেকে ছয় বাংলাদেশির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মা-বাবা, বোন ও দাদিকে হত্যা করে আত্মহত্যার পরিকল্পনা করেন পরিবারের ছোট ছেলে ফারহান তৌহিদ (১৯)। আর এতে সায় দেন জমজ বড় ভাই ফারবিন তৌহিদ।
এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ফারহান তৌহিদের ফেসবুক স্ট্যাটাস পর্যালোচনা করে এলেন সিটি পুলিশের সার্জেন্ট জন ফেলী জানান, সম্ভবত গত শনিবার এমন নৃশংস ঘটনা ঘটে।
ফারহান তৌহিদ ফেসবুকে তাদের আত্মহত্যা ও অন্যদের হত্যার ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছে উল্লেখ করে স্থানীয় পুলিশ এটিকে ‘হতাশার ধারা বিবরণী’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কোনো কারণে হয়তো তৌহিদুল ইসলামের দুই ছেলে বিষন্নতায় ভুগছিলেন।
ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে ফারহান উল্লেখ করেছেন, ২০১৬ সালে নবম গ্রেডে পড়া অবস্থায় তিনি বিষন্নতায় আক্রান্ত হয় বলে চিকিৎসকরা জানান। এ জন্য তিনি পরীক্ষায় বারবার ফেল করেন। এ জন্য তিনি নিজের শরীরে দু’বার কেটেছে। খুবই কষ্ট পান। তার মনে আছে ২০১৭ সালের ২২ আগস্ট, কাঁচির মত ধারালো অস্ত্র দিয়ে নিজের শরীরে কেটেছিলেন। দুঃখ লাঘবের পথ খুঁজেছিলেন তিনি। এ অবস্থায় তার ঘনিষ্ঠ তিন বন্ধু তাকে ত্যাগ করেন। এমনি হতাশার মধ্যেই তাকে ভর্তি করা হয় ইউনিভার্সিটি অব অস্টিনে কম্পিউটার সায়েন্স ডিপার্টমেন্টে। এরপর তিনি ভাবেন যে, এবার জীবনটা সঠিক ট্র্যাকে উঠেছে। বাস্তবে তা ঘটেনি। বিষন্নতায় জর্জরিত হয়ে পুনরায় তিনি নিজের শরীর রক্তাক্ত করেন।
সেখানে তিনি আরও লিখেছেন, যদি আত্মহত্যা করি তাহলে গোটা পরিবার সারাটি জীবন কষ্ট পাবে। সেটি তিনি চান না। সেজন্যে পরিবারের সবাইকে নিয়ে মারা যাওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে ভাইকে সামিল করেন। দু’ভাই যান বন্দুক কিনতে। তিনি হত্যা করবেন ছোট বোন আর নানিকে। আর তার ভাই করবেন মা-বাবাকে। এরপর উভয়ে আত্মহত্যা করবে। যাতে কেউ থাকবে না কষ্ট পাওয়ার।
সেখানে আরও উল্লেখ করেন, বন্দুক কেনার ব্যাপারটি খুবই সহজ। তার ভাই গেলেন দোকানে। বললেন যে, বাড়ির নিরাপত্তার জন্যে বন্দুক দরকার। দোকানি কয়েকটি ফরম ধরিয়ে দিলেন, সেখানে স্বাক্ষর করলেন ভাই। এরপর হাতে পেয়ে যান কাঙ্ক্ষিত বস্তুটি।