নিজের স্ত্রীর সঙ্গে এক কিশোরের পরকীয়ার সম্পর্ক আছে—এমন ঘটনা জানতে পেরে স্ত্রীর মুঠোফোন থেকে কল দিয়ে ডেকে আনা হয় ওই কিশোরকে। এরপর জামালপুরের দিগপাইত ইউনিয়নের হবদেশ গ্রামে হাত-পা বেঁধে গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়। লাশ লুকিয়ে রাখা হয় একটি ডোবায়। এ ঘটনার এক মাস পর লাশের খোঁজ পান ওই কিশোরের স্বজনেরা।
হাবিবুর রহমান (১৬) নামের ওই কিশোরের লাশ উদ্ধার করা হয় মাথাবিহীন অবস্থায়। ২২ মার্চ লাশ উদ্ধারের পর হত্যা মামলা হয় পরদিন ২৩ মার্চ। এর এক মাস আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে নিখোঁজ ছিল হাবিবুর। তার বাড়ি হবদেশ গ্রামে। বাবার নাম জাহান উদ্দিন। হাবিবুর ঘোড়ামারা মল্লিক মণ্ডল দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
হাবিবুরের লাশ উদ্ধারের দুই দিন পর ২৫ মার্চ ঢাকার গাজীপুর থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর নাম ময়নাল হক (৪০)। পেশায় ভ্যানচালক। আটকের পর তিনি ২৭ মার্চ প্রথমে পুলিশ ও পরে আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে জানান, তাঁর স্ত্রীর সঙ্গেই পরকীয়ার জেরে হত্যা করা হয় হাবিবুরকে। ময়নালের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে আজ বুধবার সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সীমা রানী সরকার।
নিজ কার্যালয়ে সীমা রানী সরকার জানান, হাবিবুরের সঙ্গে ময়নাল হকের ৩২ বছর বয়সী স্ত্রীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে ময়নাল তা জানতে পারেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। স্বীকারোক্তিতে ময়নাল বলেছেন, এ কারণেই হাবিবুরকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
সে অনুযায়ী ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে স্ত্রীর মুঠোফোন থেকে ওই ছাত্রকে ডেকে আনা হয়। রাত একটার দিকে বাড়ির কাছেই শিল্পাঞ্চলের একটি উন্মুক্ত মাঠে নিয়ে ওই ছাত্রের হাত-পা বেঁধে হত্যা করা হয়। পরে লাশ মাঠের কাছেই বামনজি বিলে লুকিয়ে রাখা হয়। ঘটনার পর ময়নাল পালিয়ে চলে যান গাজীপুর।
সীমা রানী সরকার বলেন, মুঠোফোনের সূত্র ধরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২৫ মার্চ ময়নাল হককে গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করেন। তাঁর স্বীকারোক্তি অনুয়ায়ী হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়। গ্রেপ্তার সবাই হবদেশ গ্রামের বাসিন্দা।