দেড়যুগ পর শিরোপার হাতছানি বাংলাদেশের

শিরোপার থেকে মাত্র এক পা দূরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার হুংকার, ‘ট্রফি নিয়েই দেশে ফিরতে চাই।’ পাশেই থাকা নেপালের অধিনায়ক কিরন কুমার লিম্বুর কন্ঠে আত্মবিশ্বাসী সুর, ‘ফাইনালে নিশ্চয় আমরা গোল পাব, ট্রফিটা নিজেদের দেশে রেখে দিতে পারব।’

তিনজাতি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে দুই দল মাঠে নামছে বিকেলে। ফাইনাল মহারণ শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে। ম্যাচটি হবে নেপালের কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে। হোম গ্রাউন্ড ও চিরচেনা কন্ডিশনের সঙ্গে স্বাগতিকদের জন্য বাড়তি পাওয়া ফুলহাউজ গ্যালারি। ফাইনাল ম্যাচের ১২ হাজার টিকিট বিক্রি করেছে নেপাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। নিশ্চিতভাবে হোম ক্রাউডের সামনে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে বাংলাদেশকে।

শিরোপা খরা ঘোচানোর সুবর্ণ সুযোগ বাংলাদেশর সামনে। নেপালে জামালরা শিরোপা উৎসব করলে ১৮ বছর পর বাংলাদেশ কোনো আন্তর্জাতিক ট্রফি জিতবে। সর্বশেষ ২০০৩ সালে ঘরের মাঠে সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশ শেষবার ফাইনাল জিতেছিল ১৯৯৯ সালে। এসএ গেমসে নেপালের মাটিতেই স্বাগতিকদের ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ।

স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশকে আরেকবার উৎসবে ভাসানোর প্রত্যয় বাংলাদেশের অধিনায়কের, ‘বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫০ বছর পালন করছে। আমাদের ওপর দেশের সবার প্রত্যাশা অনেক। আশাকরি আমরা ফাইনাল জিতে ট্রফি দেশে নিয়ে যেতে পারব।’

গণমাধ্যমে জামাল আরো বলেন, ‘শিরোপা জিততে হলে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে। মাঠ, দর্শক সবাই তাদের পক্ষে। ওরা স্বাভাবিকভাবেই এগিয়ে থাকবে। তবে বাংলাদেশ দলও তার চেয়ে ভালো।’ শিরোপা খরার সঙ্গে গোল খরাও কাটাতে চান অধিনায়ক, ‘আমরা কেন গোল করতে পারি না সেটা নিয়েও আলোচনা হয়। সুমন, শুফিলরা লিগে দারুণ গোল করে। এবারও তারা পারবে আশা করি।’

নেপালের অধিনায়ক কুমার লিম্বু নিজেদের এগিয়ে রেখে বললেন, ‘শেষ দুই ম্যাচে আমাদের পারফরম্যান্সে খুশি। হ্যাঁ গোল হয়নি একটিও। তবে আমরা সুন্দর ফুটবল উপহার দিয়েছি। ফাইনালে নিশ্চয়ই গোল পাবো। ট্রফিটা আমাদেরই হবে।’

প্রতিযোগিতার মান নিয়ে চাইলেই প্রশ্ন তোলা যায়। তিন ম্যাচ খেলে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে দুই দল। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ কিরগিজস্তানের অনূর্ধ্ব-২৩ দলকে ১-০ গোলে হারায়। ম্যাচের একমাত্র গোলটিই এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের একমাত্র গোল। সেটাও এসেছিল আত্মঘাতী শটে। দ্বিতীয় ম্যাচে নেপাল ও কিরগিজস্তানের ম্যাচটি গোলশূণ্য ড্র হয়। তৃতীয় ম্যাচে স্বাগতিক দল ও বাংলাদেশের ম্যাচেও একই ফল। পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে থেকে বাংলাদেশ নিশ্চিত করে ফাইনাল। নেপাল দুই ড্রয়ে শিরোপার লড়াইয়ে টিকে থাকে।

র‌্যাংকিংয়ে নেপালের অবস্থান ১৭১। বাংলাদেশের ১৮৬। র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকলেও পরিসংখ্যানে এগিয়ে। দুই দলের ২৫ মুখোমুখিতে বাংলাদেশের জয় ১৩টি, নেপালের ৭টি। ড্র হয়েছে বাকি ম্যাচ। বাংলাদেশকে আশা দেখা পারে সবশেষ তিন ম্যাচও। যেগুলোতে নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশ হারেনি একটিতেও।

এবার জামালদের শিরোপা জেতার পালা। নেপালে জামালরা জিতলে উৎসব হবে বাংলাদেশেও।

Share this post

scroll to top