ময়মনসিংহ সদর উপজেলার বিদ্যাগঞ্জ রেল স্টেশন এলাকা থেকে বুধবার রাতে জামায়েতুল মোজাহেদীন বাংলাদেশ(জেএমবি)-এর নারী সদস্যসহ জেএমবির ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪। এসময় বেশ কিছু বই জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন সিয়াম আল মাহমুদ (১৯), নাসরিন আক্তার ওরফে যোয়াইরা (২১), শাহীন ইসলাম ওরফে মাহবুব ইসলাম (২২) ও শাখাওয়াত করিম (৩৬)। গ্রেফতারকৃত জঙ্গীরা টেলিগ্রাম, থ্রিমা ও ফেসবুকের মাধ্যমে একে অপরের সাথে পরিচিত। এই দলটি বিদেশে গিয়ে ট্রেনিংপ্রাপ্ত হয়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা করেছিল বলে র্যাব জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে র্যাব-১৪ এর সদর দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব ১৪ অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল এফতেখার উদ্দিন জানান, গ্রেফতারকৃতরা সবাই জেএমবির সক্রিয় সদস্য বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়। টেলিগ্রাম, থ্রিমা ও ফেইসবুকের মাধ্যমে এরা একে অপরের সাথে পরিচিত। বিদেশে গিয়ে ট্রেনিংপ্রাপ্ত হয়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করার পরিকল্পনা করে। টেলিগ্রামে পরিচয় হয়ে সিয়াম ময়মনসিংহ, যোয়াইরা সিলেট, শাখাওয়াত ঢাকা এবং শাহীন চুয়াডাঙ্গা থেকে ঢাকার কমলাপুরে এসে মিলিত হয়। পরে তারা কলমাপুর থেকে জামালপুরগামী কমিউটার ট্রেনযোগে ময়মনসিংহ সদরের বিদ্যাগঞ্জ রেল স্টেশনে এসে নামে। আগে থেকে ওয়াচে রাখা র্যাব-১৪ একটি আভিযানিক দল ট্রেন থেকে নামার পরপরই তাদের গ্রেফতার করে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে র্যাব জানায়।
সাংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সিয়াম আল মাহমুদ ময়মনসিংহ সদরের চকছত্রপুর গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে। সে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী। গত নভেম্বর মাসে সে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। সেই সময় তার মা আঞ্জুমানারা বেগম সন্তান নিখোঁজ বলে র্যাবের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করে। সিয়াম ইউটিউরের মাধ্যমে ইমাম মাহদী, গাজাতুল হিন্দ, দাজ্জাল সম্পর্কে ধারণা লাভ করে। ফেসবুকে নাসরিনের সাথে পরিচয় এবং তাকে দেশত্যাগের জন্য অনুপ্রাণিত করে।
শহীন ইসলাম চুয়াডাংগা জেলা আলমডাংগা উপজেলার নিশ্চিন্দিপুর গ্রামের রায়হান মন্ডলের ছেলে। দশম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করে বাবার সাথে কৃষি কাজ করত। সে ফেসবুক আইডি খুলে বিভিন্ন পোস্ট পড়ত। সেখানে ভাবুক মানুষ ভাবুক নামে একটি ফেসবুক আইডির সাথে পরিচয় হয়। একটি টেলিগ্রাম আইডিও খোলে সে। এভাবেই উগ্রপন্থার প্রতি অনুপ্রাণিত হয়ে জেএমবিতে যোগ দেন।
নাসরিন আক্তার ওরফে যোয়াইরা সিলেটের গুটাটিঘর এলাকার আব্দুর রহমানের মেয়ে। সে ফেসবুকের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে অনুপ্রাণিত হয়। আর শাখাওয়াত করিম সীতাকুন্ডের দারুগাহাটের মৃত খায়রুল ইসলামের ছেলে। ফেসবুকের মাধ্যমে গ্রেফতারকৃত বাকীদের সাথে পরিচয় হয়। সে ২০১৬ সালে বাহরাইন থেকে জেল খেটে গত কোরবানী ঈদে দেশে ফিরে।