ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর মুজিবনগর সড়ক প্রকল্পের সাড়ে ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। রাস্তা থেকে উঠানো পুরানো পাথরের সাথে আবর্জনাযুক্ত বালু মিশিয়ে রোলার করার কারণে রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঝিনাইদহের হলিধানী বাজারের জনগণ রাস্তার কাজ বন্ধ করে দেন।
কাজ বন্ধ করা এলাকাবাসীর মধ্যে একজন মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, রাস্তায় ময়লাযুক্ত বালুর সাথে কিঞ্চিত খোয়া মিশিয়ে রাতারাতি রোলার করার বিষয়টি প্রথমে তার নজরে আসে। তিনি অভিযোগ করেন, পুরানো রাস্তা ভাঙ্গা খোয়া আগের রাতে ভেঙ্গে তাই দিয়ে রাস্তা করা হচ্ছে। রাস্তায় ৭৫% বালি ও ২৫% খোয়া দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। হলিধানী বাজার কমিটির লোকজন অভিযোগ করেন, সবচে বিবেচ্য বিষয় রাস্তায় যেসব দ্রব্য ব্যাবহার করা হচ্ছে তা একেবারেই নিম্নমানের।
ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর মুজিবনগর ৪ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের সাড়ে ১৭ কোটি টাকার কাজটি পান ময়মনসিংহের ঠিকাদার শামীম এন্টারপ্রাইজ। তার কাছ থেকে কাজটি কিনে করছেন আবু মুনছুর এন্টারপ্রাইজ। প্রথম থেকেই এই রাস্তার কাজটি ছিল দুর্নীতিতে ভরা। পুরানো রাস্তার পিচযুক্ত পাথর হলার করে তাই রাস্তায় ব্যবহার করা হচ্ছে। সেই সাথে আমা ইটের খোয়া ও ময়লাযুক্ত বালি ব্যবহার করায় কয়েক দফা কাজটি বন্ধ করে দেন এলাকাবাসী।
তবে এই রাস্তার কাজ তদারকীতে ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের গাফলতি আছে বলেও স্থানীয়রা মনে করেন।
রাস্তার কাজ বন্ধ করার কথা স্বীকার করে ঝিনাইদহ সওজ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী তানভির আহম্মেদ জানান, খবরটি পাওয়ার পর আমরা স্থানীয় মানুষ সাথে কথা বলার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, হলিধানী বাজার কমিটির কথামতো রাস্তা উঁচু করতে গিয়ে ঠিকাদার মূল নকশা অনুসরণ করছেন না। এ কারণে হয়তো তিনি দুর্নীতি করতে পারেন।
ঝিনাইদহ সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম জানান, আমি মাগুরা শহরে একটি মিটিংয়ে আছি। খোঁজ খবর নিয়ে জানাতে পারবো।
উল্লেখ্য, এর আগে একই সড়কের বিভিন্ন কিলোমিটারে ৭৬ লাখ টাকা ব্যায়ে মেরামতসহ সিলকোটের কাজ যেনতেন ভাবে শেষ করে তড়িঘড়ি করে বিল তুলে নিয়েছে ঠিকাদার। এ সব দুর্নীতির সাথে ঝিনাইদহ সওজ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী তানভির আহম্মেদ সরাসরি জড়িত বলেও অভিযোগ উঠেছে। তবে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী তানভির আহম্মেদ তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেন।