শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা শ্রীবরর্দী ,ঝিনাইগাতি ও নালিতাবাড়ী। এই উপজেলা তিনটি ঘিরে রয়েছে সরকারের সংরক্ষিত, রক্ষিত, অর্পিত বিশাল বনাঞ্চল।
সরকারের আইন অনুযায়ী সংরক্ষিত, রক্ষিত, অর্পিত বা অন্য কোন ধরনের সরকারি বনভূমির সীমানা হতে ন্যূনতম ১০ কিলোমিটারের মধ্যে করাত কল স্থাপন করা যাবে না। করাত কল স্থাপনের আগে সরকারি অনুমোদন নিতে হবে।
সরকারি সকল বিধান লংঘন করে এই তিন উপজেলায় বনাঞ্চলের এক থেকে পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে অন্তত ৩০টি, ১০ কিমি মধ্যে ৫৫টি সমিল অবৈধভাবে চলছে রাতদিন। এতে উজার হয়ে যাচ্ছে বনের গাছ।
জানা গেছে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সমিল স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি সর্বশেষ বন বিভাগ থেকে নিবন্ধন নিতে হয়। লাইসেন্স বাধ্যতামূলক হলেও কেউ মানছে না আইন।
সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত কাটা হচ্ছে গাছ। রাতের অন্ধকারে চোরাই পথে আসা গাছ দিয়ে চলছে অধিকাংশ সমিল। স্থানীয়দের অভিযোগ এক শ্রেণী অসাধু ব্যক্তিদের লেনদেনের প্রশ্রয়ে গড়ে উঠছে এসব সমিল।
বন বিভাগের তথ্যমতে, তিন উপজেলায় অন্তত ১শ ৭৫টি সমিল আছে। যার মধ্যে লাইসেন্স আছে মাত্র ২৮টির। তিনটি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা শ্রীবরর্দী উপজেলার। শ্রীবরর্দী উপজেলায় মোট সমিল আছে ৭৫টি। লাইসেন্স আছে ৯টির, লাইসেন্সের জন্য আবেদন আছে ৯টি।
শ্রীবরর্দী উপজেলার বন সংলগ্ন রাণি শিমুল ইউনিয়নের আনাচে কানাছে গড়ে উঠেছে সমিল। সরকারি হিসাবে বনাঞ্চচলের মধ্যে ১৭টি সমিল চলছে। নালিতাবাড়ী উপজেলায় মোট সমিলের সংখ্যা ৭০টি। এর মধ্যে নিবন্ধন আছে ১৫টির। নিবন্ধনের আবেদন আছে আরও ১০টির।
ঝিনাইগাতি উপজেলায় সমিলের সংখ্যা ৩০টির মত। নিবন্ধন আছে মাত্র ৪টির। উপজেলার বনাঞ্চল ধানশাইল এলাকায় বনের ভিতর আছে ৪টি করাত কল। সমিল মালিকদের অনেকের অভিযোগ আবেদন করেও বছরের পর বছর ধরে লাইসেন্স পাচ্ছেন না।
সহকারি বন সংরক্ষক ড. প্রাণতোষ চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘লোকবল সংকটের জন্য ব্যবস্থা নিলেও আবার সেই আগের অবস্থায় চলে আসে। বনাঞ্চল থেকে সমিল সরাতে জরুরী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শ্রীবরর্দী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা জানিয়েছেন, ‘খুব দ্রুত মোবাইল কোর্ট করা হবে। তবে বিষয়টি শুধু মোবাইল কোর্ট দিয়ে সমাধান না হলে বনবিভাগকে আরও সক্রিয় হতে হবে।’