ময়মনসিংহে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নবজাতক হত্যার অভিযোগে ক্লিনিকের তিন মালিককে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন রেজাউল কবির মুরাদ, আজাহার মাহমুদ জুয়েল ও আশরাফুর রহমান রনি।
সদর উপজেলার ক্যল্যাণপুর গ্রামের পোশাক শ্রমিক হারুন অর রশিদ জানান, রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে তার স্ত্রী জান্নাত বেগমের (২২) প্রসব ব্যাথা নিয়ে শহরে এলে দালালের খপ্পরে পড়ে প্রসূতিকে শহরের কৃষ্টপুর রেলগেইট সংলগ্ন পরশ (প্রাইভেট) হাসপাতালে ভর্তি করান। ১৬ হাজার টাকার সাব্যস্ত করে রাতেই সিজারের মাধ্যমে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।
এরপর, শিশুটি জন্মের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জান্নাত বেগমের মৃত কন্যাশিশু হয়েছে বলে প্রসূতির পরিবারকে জানায় এবং মৃত শিশুকে দেখাতে গড়িমসি করে। প্রসূতির পরিবারের চাপে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আধাঘন্টা পর মৃত শিশুকে স্বজনদের হাতে তুলে দেন। এসময় নবজাতকের পিঠে ও গালে ধারালো অস্ত্রের কাটার চিহৃ দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। স্বজনরা আঘাতের কারণ জানতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি।
এরপর নবজাতকের বাবা মৃত শিশুকে নিয়ে সাবেক ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের ভাগিনা বুলবুল আহমদের বাসায় ছুটে যান এবং নবজাতক হত্যার অভিযোগ করেন। তিনি নবজাতকের পরিবারকে ডিবি পুলিশের কাছে পাঠান। সেখান থেকে স্বজনরা মৃত শিশুকে নিয়ে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে আসেন এবং পরে কোতোয়ালী থানায় গিয়ে কন্যা শিশু হত্যাকারীদের বিচার দাবি করেন। পরশ হাসপাতালের চিকিৎসকরা নবজাতকে হত্যা করেছে এমন অভিযোগ করে তদন্তপূর্বক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন তিনি।
পরশ (প্রাইভেট) হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক এফডি আমিন শিশির কর্তব্যে অবহেলায় নবজাতক শিশু মৃত্যুর কথা অস্বীকার করে জানান, শিশুটি জন্মের ৩/৪দিন আগেই মারা গেছে। এজন্য শিশুটির শরীরে পচন ধরায় ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। একই বক্তব্য দেন পরশ (প্রাইভেট) হাসপাতালের পরিচালক রেজাউল কবির মুরাদ।
সিভিল সার্জন ডা. এ কে এম আব্দুর রব জানান, পরশ (প্রাইভেট) হাসপাতালের রেজিস্ট্রশন নেই। তবে শিশু মৃত্যুর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়ী কিনা তদন্ত করা হবে।
কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মনসুরুল আলম জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরশ (প্রাইভেট) হাসপাতালের তিন পরিচালক রেজাউল কবির মুরাদ, আজাহার মাহমুদ জুয়েল ও আশরাফুর রহমান রনিকে আটক করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।