চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণের তারিখ নিয়েও নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। মধ্য ফেব্রুয়ারিতে স্কুল-কলেজ খোলা হলে আগামী জুন-জুলাইয়ে এসএসসি ও আগস্টে এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার যে তারিখ ঘোষণা দেয়া হয়েছিল, সেটি নিয়েও এখন অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। কেননা এসএসসি শিক্ষার্থীদের ৬০ দিন ক্লাস এবং এইচএসসি শিক্ষার্থীদের ৮৪ দিন ক্লাস নেয়ার যে পরিকল্পনা করা হয়েছিল, সেটিও এখন আর সম্ভব হচ্ছে না। ফলে নতুন সিলেবাস ও শিডিউল তৈরি করে তবেই আবার এই পরীক্ষা দু’টির তারিখ ঘোষণা করতে হবে।
যদিও এর আগে গত জানুয়ারি মাসের ২৭ তারিখে শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি ঘোষণা করেছিলেন আগামী জুন-জুলাই মাসে ২০২১ সালের এসএসসি ও আগস্টে এইচএসসি পরীক্ষার আয়োজন করা হবে। অবশ্য তখন বলা হয়েছিল মধ্য ফেব্রুয়ারিতে স্কুল-কলেজ সীমিত পরিসরে খুলে দিয়ে শুধু পরীক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দিয়ে ক্লাসে ফেরানো হবে। কিন্তু পরে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন, করোনা পরিস্থিতির আরো উন্নতি না হলে স্কুল-কলেজ খুলে দিয়ে আমরা শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে চাই না। পরে আরেক দফায় বাড়ানো হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি।
এ দিকে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হওয়ায় এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য ৬০ দিন এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য ৮৪ দিনের ক্লাসও করা যাচ্ছে না। ফলে অনিশ্চয়তায় পড়েছে চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড সূত্র জানায়, চলতি বছরে এসএসসির জন্য ৬০ কর্মদিবস ও এইচএসসির জন্য ৮৪ কর্ম দিবস ক্লাস ধরে পরীক্ষা আয়োজনের টার্গেট নিয়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসও প্রণয়ন করেছিল জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। মধ্য ফেব্রুয়ারি এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে এই সিলেবাস পড়ানোর কথা ছিল। তবে সেটি সম্ভব হয়নি। তাই আগামী জুন-জুলাই মাসে পরীক্ষার আয়োজন করা সম্ভব হবে না।
এ বিষয়ে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা সমন্বয় সাব কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর এস এম আমিরুল ইসলাম বলেন, মধ্য ফেব্রুয়ারির মধ্যে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ক্লাস করাতে পারলে জুন-জুলাইয়ে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হতো। তবে সেটি না হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষার আয়োজন সম্ভব হবে না। কেননা শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন ক্লাস না করিয়ে কিংবা শিক্ষার্থীদের না পড়িয়ে পরীক্ষা নেয়া হবে না।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ জানুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনির সভাপতিত্বে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সরাসরি শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের পরই এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া হবে। যদি ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যেত তবেই হয়তো এটি কার্যকর করা সম্ভব হতো।
এ দিকে শিক্ষা বোর্ড সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশের এক মাস হতে চললেও সশরীরে পাঠদান শুরু করা সম্ভব হয়নি। আগামী ২৩ মে পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধের ঘোষণা আসায় রোজার ঈদের আগে স্কুল-কলেজ খোলার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ফলে নির্ধারিত সময়ে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার আয়োজন করা সম্ভব হবে না।