নোয়াখালীতে তিন সন্তানের জননীকে গণধর্ষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের নবগ্রামে শুক্রবার মধ্যরাতে তিন সন্তানের জননীকে গণধর্ষণের প্রতিবাদে ও ধর্ষকদের গ্রেফতারের দাবীতে হাজারো মানুষ মানববন্ধন করেছে। কবিরহাট উপজেলার স্থানীয় সমিতি বাজারে রোববার দুপুরে মানববন্ধন পালিত হয়।

এ সময় বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, রাজনীতিকসহ দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে ঘন্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালিত হয়। সমাবেশে বক্তরা ধর্ষণকারী যে দলেরই হোক বা যত প্রভাবশালীই হোক না তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন।

একই সঙ্গে এ ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে যেন সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা না হয় সে দাবীও জানানো হয়। তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে স্থানীয় সাংসদ ও সরকারের সড়ক-পরিবহণ সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

বক্তারা আরো বলেন, ঘটনায় সম্পৃক্ত গ্রেফতারকৃত জাকির হোসেন ওরফে জহিরসহ অনেকে দলীয় সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে এলাকায় ইয়াবা বিক্রি, চুরিসহ নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। পুলিশ সব জানলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বার বার এলাকায় সকল প্রকার অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে তারা। এ ঘটনার ২ দিন অতিবাহিত হলে ও আর কোন আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা অবিলম্বে ধর্ষকদের গ্রেফতারের দাবী জানান।

এক গৃহবধূ গণধর্ষণের ১৮ দিন যেতে না যেতে ফের নোয়াখালীর কবিরহাটের ধানসিঁড়ি ইউনিয়নে শুক্রবার গভীর রাতে ৩ সন্তানের জননী গৃহবধূকে অস্ত্রের মুখে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা জাকির হোসেনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় ৪ জনের বিরুদ্ধে কবিরহাট থানায় মামলা হয়েছে।

উপজেলার ধাঁনসিড়ি ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কর্মীর স্ত্রী ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ জানান, গভীররাতে ঘরের সিঁদ কেটে স্থানীয় এনামুল হকের পুত্র জাকির হোসেনসহ ৪ জনের একটি দল ঘরে ঢুকে প্রথমে নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাকে বেঁধে ফেলে। তার ছেলে ও মেয়েকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাকে ধর্ষণ করে।

ধর্ষণকারীরা বলে ‘আমরা পুলিশের লোক’ তোর স্বামীকে জেল থেকে ছেড়ে এনে দিব। এসময় তারা ৬০ হাজার টাকা দাবী করে। সকালে ঘটনাটি বাড়ীর লোকজন টের পেয়ে প্রথমে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানায় এবং পরে পুলিশকে খবর দেয়।

সকালে ধর্ষিতা থানায় গিয়ে নিজে বাদী হয়ে জাকির হোসেন ও অজ্ঞাত ৩ জনসহ মোট ৪ জনের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা করে। গৃহবধূ আরো জানায়, কয়েকদিন আগে তার স্বামী আবুল হোসেনকে পুলিশ রাজনৈতিক দুই মামলায় ধরে নিয়ে যায়। বর্তমানে সে নোয়াখালী জেল হাজতে রয়েছে।

জানা গেছে, ধর্ষণ মামলার আসামী জাকির হোসেন ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি। তার নেতৃত্বে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. সৈয়দ মহিউদ্দিন আ. আজিম বলেন রোগীটি চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ব্যাপারে পরীক্ষা নিরিক্ষা চলছে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top